পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ORo রবীন্দ্র-রচনাবলী কাদম্বিনী ভদ্রলোকটিকে কহিল, “নিশিন্দাপুরে শ্ৰীপতিচরণবাবুর বাড়ি যাইব ।” p পথিক কলিকাতায় যাইতেছিলেন ; নিশিন্দাপুর যদিও নিকটবর্তনহে। তথাপিতীহার গম্য পথেই পড়ে। তিনি স্বয়ং বন্দোবস্ত করিয়া কাদম্বিনীকে শ্ৰীপতিচরণবাবুর বাড়ি পীেছাইয়া দিলেন। , দুই সইয়ে মিলন হইল। প্রথমে চিনিতে একটু বিলম্ব হইয়াছিল, তার পরে বাল্যসাদৃশ্য উভয়ের চক্ষে ক্রমশই পরিস্ফুট হইয়া উঠিল। যোগমায়া কহিল, “ওমা, আমার কী ভাগ্য। তোমার যে দর্শন পাইব এমন তাে আমার মনেই ছিল না। DD BDDS D DDD BDD DBB SBBBD DBBBDB BBDB DB BBB DBD DDD S কাদম্বিনী চুপ করিয়া রহিল, অবশেষে কহিল, “ভাই, শ্বশুরবাড়ির কথা আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়ো না । আমাকে দাসীর মতো বাড়ির একপ্রান্তে স্থান দিয়ে, আমি তোমাদের কাজ করিয়া দিব।” যোগমায়া কহিল, “ওমা, সে কী কথা। দাসীর মতো থাকিবে কেন । তুমি আমার সই, তুমি আমার”— शैलान्नेि । এমন সময় শ্ৰীপতি ঘরে প্রবেশ করিল। কাদম্বিনী খানিকক্ষণ তাহার মুখের দিকে তাকাইয়া ধীরে ধীরে ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল-মাথায় কাপড় দেওয়া, বা কোনোরূপ সংকোচ বা সম্রামের লক্ষণ দেখা গোল N পাছে তাহার সইয়ের বিরুদ্ধে শ্ৰীপতি কিছু মনে করে, এজন্য ব্যস্ত হইয়া যোগমায়া নানারূপে তাহাকে বুঝাইতে আরম্ভ করিল। কিন্তু এতই অল্প বুঝাইতে হইল এবং শ্ৰীপতি এত সহজে যোগমায়ার সমস্ত প্ৰস্তাবে অনুমোদন করিল যে, যোগমায়া মনে মনে বিশেষ সন্তুষ্ট হইল না। ? কাদম্বিনী সইয়ের বাড়িতে আসিল, কিন্তু সাইয়ের সঙ্গে মিশিতে পারিল না— মাঝে মৃত্যুর ব্যবধান। আত্মসম্বন্ধে সর্বদা একটা সন্দেহ এবং চেতনা থাকিলে পরের সঙ্গে মেলা যায় না- কাদম্বিনী যোগমায়ার মুখের দিকে চায় এবং কী যেন ভাবে- মনে করে, স্বামী এবং ঘরকন্না লইয়া ও যেন বহুদূরে আর-এক জগতে আছে। স্নেহমমতা এবং সমস্ত কর্তব্য লইয়া ও যেন পৃথিবীর লোক, আর আমি যেন শূন্য ছায়া। ও যেন অস্তিত্বের দেশে আর আমি যেন অনন্তের মধ্যে । যোগমায়ারও কেমন কেমন লাগিল, কিছুই বুঝিতে পারিল না। স্ত্রীলোক রহস্য সহ্য করিতে পারে নাকারণ অনিশ্চিতকে লইয়া কবিত্ব করা যায়, বীরত্ব করা যায়, পাণ্ডিত্য করা যায়, কিন্তু ঘরকন্না করা যায় না । এইজন্য স্ত্রীলোক যেটা বুঝিতে পারে না, হয় সেটার অস্তিত্ব বিলোপ করিয়া তাহার সহিত কোনো সম্পর্ক রাখে না, নয় তাহাকে স্বহস্তে নূতন মূর্তি দিয়া নিজের ব্যবহারযোগ্য একটি সামগ্ৰী গড়িয়া তোলে- যদি দুইয়ের কোনােটাই না পারে তবে তাহার উপর ভারি রাগ করতে থাকে। । কাদম্বিনী যতই দুর্বোিধ হইয়া উঠিল, যোগমায় তাহার উপর ততই রাগ করিতে লাগিল, ভাবিল, এ কী উপদ্রব স্কন্ধের উপর চাপিল । আবার আর-এক বিপদ। কাদম্বিনীর আপনাকে আপনি ভয় করে। সে নিজের কােছ হইতে নিজে কিছুতেই পলাইতে পারে না। যাহাদের ভূতের ভয় আছে তাহারা আপনার পশ্চাদিককে ভয় করেযেখানে দৃষ্টি রাখিতে পারে না সেইখনেই ভয়। কিন্তু কাদম্বিনীর আপনার মধ্যেই সর্বাপেক্ষা বেশি ভয়বাহিরে তার ভয় নাই । এইজন্য বিজন দ্বিপ্রহরে সে এক ঘরে এক-একদিন চীৎকার করিয়া উঠিত- এবং সন্ধ্যাবেলায় দীপালোকে আপনার ছায়া দেখিলে তাহার গা ছমছম করিতে থাকিত। তাহার এই ভয় দেখিয়া বাড়িসুদ্ধ লোকের মনে কেমন একটা ভয় জন্মিয়া গেল। চাকরিদাসীরা এবং যোগমায়াও যখন তখন যেখানে-সেখানে ভূত দেখিতে আরম্ভ করিল। " একদিন এমন হইল, কাদম্বিনী অর্ধরাত্রে আপনি শয়নগৃহ হইতে কঁাদিয়া বাহির হইয়া একেবারে মুকুঠুরূরে অসিয়া কফি, ঈদ, পদ, তােমার দৃষ্ট পায় পড়ি গে। আমার কেলা ফেলিয়া शों कीं ।” যোগমায়ার যেমন ভয়ও পাইল তেমনি রাগও হইল। ইচ্ছা করিল। তদণ্ডেই কাদম্বিনীকে দূর করিয়া