পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্ৰন্থপরিচয় ዓ\©S বঞ্চিত, তাদের জন্যে ছোটােবড়ো প্রাদেশিক শহরগুলিতে যদি পরীক্ষাকেন্দ্ৰ স্থাপন করা যায় তবে অনেকেই অবসরমতো ঘরে বসে নিজেকে শিক্ষিত করতে উৎসাহিত হবে । নিম্নতন থেকে উচ্চতন পর্ব পর্যন্ত তাদের পাঠ্যবিষয় নির্দিষ্ট করে তাদের পাঠ্যপুস্তক বেঁধে দিলে সুবিহিতভাবে তাদের শিক্ষা নিয়ন্ত্রিত হতে পারবে। এই পরীক্ষার যোগে যে-সকল উপাধির অধিকার পাওয়া যাবে, সমাজের দিক থেকে তার সম্মান ও জীবিকার দিক থেকে তার প্রয়ােজনীয়তার মূল্য আছে । তাই আশা করা যায়, দেশব্যাপী পরীক্ষাথীর দেয় অর্থ থেকে অনায়াসে এর ব্যয় নির্বাহ হবে। এই উপলক্ষে পাঠ্যপুস্তক রচনার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়ে জনসাধারণের মধ্যে বিদ্যাবিস্তারের - উপাদান বেড়ে যাবে এবং এতে করে বিস্তর লেখকের জীবিকার উপায় নির্ধারিত হবে । একদা বিশ্বভারতী থেকে এই কর্তব্য গ্ৰহণ করবার সংকল্প মনে উদয় হয়েছিল। কিন্তু দরিদ্রের মনোরথ মনের বাইরে অচল । তা ছাড়া রাজসরকারের উপাধিই জীবনযাত্রায় কর্ণধার । “বাংলা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারেও ইতিপূর্বে শিক্ষার বিকিরণ প্রবন্ধে তিনি অনুরূপ “আবেদন উপস্থিত। করিয়াছিলেন : মস্তিষ্কের সঙ্গে স্নায়ুজালের অবিচ্ছিন্ন যোগ সমস্ত দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে । বিশ্ববিদ্যালয়কে সেই মস্তিষ্কের স্থান নিয়ে স্নায়ুতন্ত্র প্রেরণ করতে হবে দেশের সর্বদেহে । প্রশ্ন এই, কেমন করে করা যেতে পারে। তার উত্তরে আমার প্রস্তাব এই যে একটা পরীক্ষার বেড়াজাল দেশ জুড়ে পাতা হােক | এমন সহজ ও ব্যাপকভাবে তার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে ইস্কুল-কলেজের বাইরে । থেকেও দেশে পরীক্ষাপাঠ্য বইগুলি স্বেচ্ছায় আয়ত্ত করবার উৎসাহ জন্মে। অন্তঃপুরের মেয়েরা কিংবা পুরুষদের যারা নানা বাধায় বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না, তারা অবকাশকালে নিজের চেষ্টায় অশিক্ষার লজ নিবারণ করছে এইটি দেখবার উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় জেলায় জেলায় পরীক্ষার কেন্দ্ৰ স্থাপন করতে পারে । বহু বিষয় একত্ৰ জড়িত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি দেওয়া হয়, এ ক্ষেত্রে উপাধি দেবার উপলক্ষে সে-রকম বহুলতার প্রয়োজন নেই। বিশ্ববিদ্যালয় বা গবর্নমেন্ট হইতে এইরূপ পরীক্ষাকেন্দ্ৰ স্থাপনের ব্যবস্থা হয় নাই বলিয়া, রবীন্দ্রনাথের প্রবর্তনায় বিশ্বভারতী লোকশিক্ষাসংসদ যথাশক্তি দেশের বিভিন্ন স্থানে এইরূপ পরীক্ষাকেন্দ্ৰ স্থাপন করিতে থাকেন, এই কাজ এখনো চলিতেছে । পরিচয় গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে অনেক পূর্বতন প্ৰবন্ধ বর্জিত ও নূতন প্ৰবন্ধ সন্নিবিষ্ট হইয়াছে। রচনাবলীতে প্ৰথম সংস্করণের প্রবন্ধসূচী অনুসৃত হইল । কর্তার ইচ্ছায় কর্ম ১৩২৪ সালের ভাদ্র মাসের প্রবাসীতে প্রকাশিত হয় এবং ঐ বৎসরেই (২২ আগস্ট ১৯১৭) পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। তৎপূর্বে উহা কলিকাতা রামমোহন লাইব্রেরিতে (৪ আগস্ট ১৯১৭) ও ভূপেন্দ্রনাথ বসুর সভাপতিত্বে আলফ্রেড থিয়েটার গৃহে । পঠিত হয় । এই বৎসর আষাঢ় মাসে, ভারতবর্ষে আত্মশাসন-প্রবর্তনচেষ্টার ফলে, “নির্বাসিত, অবরুদ্ধ বা নজরবন্দী শত শত বাঙালীর ন্যায় শ্ৰীমতী অ্যানী বেসান্ট ও র্তাহার দুই জন সহকারীর স্বাধীনতা লুপ্ত “হয় । ‘কথা হয় যে, টাউন-হলে এক সভায় প্রতিবাদ করা হইবে, এবং তথায় বঙ্গের সব জেলার প্রতিনিধি উপস্থিত থাকিবেন । গবর্নমেন্ট পক্ষ হইতে মিঃ কামিং ও কলিকাতার পুলিশ কমিশনার। এ সভার কয়েকজন উদ্যোক্তাকে ডাকিয়া এই জানাইয়াছিলেন যে, বাংলা গবর্নমেন্ট ৫৩ প্রবাসী, ভদ্র ১৩২৪, বিবিধ প্রসঙ্গ, ‘প্রতিবাদের অধিকার ।