পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ সপ্তক উদ্ধার করলুম। লুঠের জিনিস, স্পর্ধা করে আবার বসলুম পড়তে । হঠাৎ সে নিবিয়ে দিল আলো । আমার সেদিনকার সেই হার-মানা অন্ধকার আজ আমাকে সর্বাঙ্গে ধরেছে ঘিরে, যেমন করে সে আমাকে ঘিরেছিল দুয়ো-দেওয়া নীরব হাসিতে ভরা বিজয়ী তার দুই বাহু দিয়ে সেদিনকার সেই আলো-নেবা নির্জনে । হঠাৎ ঝরঝরিয়ে উঠল। হাওয়া গাছের ডালে ডালে, জানলাটা উঠল শব্দ করে, দরজার কাছের পর্দাটা উড়ে বেড়াতে লাগল অস্থির হয়ে । আমি বলে উঠলেম, ‘ওগো, আজ তোমার ঘরে তুমি এসেছ কি মরণ লোক থেকে তোমার বাদামি রঙের শাড়িখানি পরে ?” একটা নিশ্বাস লাগল আমার গায়ে, " শুনলেম অশ্রুতবাণী, ‘কার কাছে আসব ?” আমি বললেম, “দেখতে কি পেলে না। আমাকে ?” । শুনলেম, ‘পৃথিবীতে এসে যাকে জেনেছিলেম একান্তই, সেই আমার চিরকিশোর বধু তাকে তো আর পাই নে দেখতে এই ঘরে ।” শুধালেম, ‘সেকি নেই কোথাও ?? মৃদু শান্তসুরে বললে, “সে আছে সেইখানেই যেখানে আছি। আমি । আর কোথাও না ।” দরজার কাছে শুনলেম উত্তেজিত কলরব হাবড়া স্টেশন থেকে ওরা ফিরেছে। brał