পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎসর্গ আনো গো অশ্রাবারি । আঁধার নিশীথরাতি । জ্বলিছে পূজার বাতি । তুমি এসো এসো নারী, আনো তপণ্যবারি । খোলো হৃদয়ের গোপন কক্ষ, এলো- কেশপাশে শুভ্ৰ-বসনে জ্বালাও পূজার বাতি । এসো তাপসিনী নারী, আনো তপণ্যবারি । [পৌষ ১৩০৯} 38 আমাদের এই পল্লিখনি পাহাড় দিয়ে ঘেরা, দেবদারুর কুঞ্জে ধেনু চরায় রাখালের । কোথা হতে চৈত্রমাসে ইহাসের শ্রেণী উড়ে আসে, অঘানেতে আকাশপথে যায় যে তারা কোথা আমরা কিছুই জানি নেকে সেই সুদূরের কথা । আমরা জানি গ্রাম কখানি, চিনি দশটি গিরিমা ধারণী রাখেন মোদের কোলের মধ্যে ঘিরি । সে ছিল ওই বনের ধারে ভুট্টা খেতের পাশে যেখানে ওই ছায়ার তলে জলটি ঝ’রে আসে । ঝােনা হতে আনতে বারি জুটত হােথা অনেক নারী, উঠত কত হাসির ধবনি তারি। ঘরের দ্বারেসকাল-সাঝে আনাগোনা তারি পথের ধারে । ওই রাগিণী পথ হারাত তারি ঘুমের মাঝে । সন্ধ্যাবেলায় সন্ন্যাসী এক, বিপুল জটা শিরে, মেঘে-ঢাকা শিখর হতে নেমে এলেন ধীরে । বিস্ময়েতে আমরা সবে শুধাই, “তুমি কে গো হবে ।” বসিল যোগী নিরুত্তরে নিঝরিণীর কুলে । নীরবে সেই ঘরের পানে স্থির নয়ন তুলে । অজানা কোন অমঙ্গলে বক্ষ কঁপে ডরেরাত্রি হল, ফিরে এলেম যে যার আপনি ঘরে ।