পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ぐ)のや রবীন্দ্র রচনাবলী আসতে তা হলে তোমার যশ বাড়িত বৈ কমত না । আমার অপরাধে তিনি শান্তি পান কেন ? সুরঙ্গমা । সংসারে আমরা তো কেউ একলা নাই মা, ভালোমন্দ সকলকেই ভাগ করে নিতে হয়— সেইজন্যেই ভয়, নইলে একলার জন্যে ভয় কিসের । সুদৰ্শনা । দেখ, সুরঙ্গমা, আমি যখন থেকে এখানে এসেছি কতবার হঠাৎ মনে হয়েছে, আমার জানলার নীচে থেকে যেন বীণা বাজছে । সুরঙ্গমা। তা হবে, কেউ হয়তো বাজায় । । সুদৰ্শনা । সেখানটা ঘন বন, অন্ধকার, মাথা বাড়িয়ে কতবার দেখতে চেষ্টা করি, ভালো করে দেখতে পাই নে । সুরঙ্গমা। হয়তো কোনো পথিক ছায়ায় বসে বিশ্রাম করে আর বাজায় । সুদর্শনা। তা হবে । কিন্তু আমার মনে পড়ে আমার সেই বাতায়নটি । সন্ধ্যার সময় সেজে এসে আমি সেখানে দাড়াতুম। আর আমাদের সেই দীপ-নেবানো বাসরঘরের অন্ধকার থেকে গানের পর গান, তানের পর তান ফোয়ারার মুখের ধারার মতো উচ্ছসিত হয়ে আমার সামনে এসে যেন নানা লীলায় ঝরে ঝরে পড়ত। সেই গানই তো কোন অন্ধকারের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে কোন অন্ধকারের দিকে আমাকে ডেকে নিয়ে যেত । সুরঙ্গমা । আহা মা, সে কী অন্ধকার ! সেই অন্ধকারের দাসী আমি । সুদৰ্শন। না না, তিনি আসবেন না । তিনি আমাদের একেবারে ছেড়ে দিয়েছেন। কেনই বা না ছাড়বেন । অপরাধ তো কম করি নি । । সুরঙ্গম। যদি ছেড়ে দিতেই পারেন তা হলে তাকে আর দরকার নেই, তা হলে তিনি নেই, তা হলে আমার সেই অন্ধকার একেবারে শূন্য- তার মধ্যে থেকে বীণা বাজে নি, কেউ ডাকে নি- সমস্ত বঞ্চন | দ্বারীর প্রবেশ S\S) বন্দী কন্যকুক্তরাজ, অন্যান্য রাজগণ ও সুবৰ্ণ কাঞ্চী । রাজগণ, রণক্ষেত্রের কাজ শেষ হল ? কলিঙ্গ। কই শেষ হল। বীরত্বের পুরস্কারটি গ্রহণ করবার পূর্বেই আর-একবার তো বীরত্বের পরিচয় দিতে হবে । কাঞ্চী । মহারাজ, এখানে তো আমরা জয়মাল্য নিতে আসি নি, বরমাল্য নিতে এসেছি। বিদৰ্ভ । সেই মালা কি জয়লক্ষ্মীর হাত থেকে নিতে হবে না । কাঞ্চী । না মহারাজ, পুষ্পধনুর অন্তঃপুরেই সে মালা গাথা হচ্ছে। রক্ত-মাখা হাতে সেটা ছিন্ন করতে গেলে ফুল ধুলায় লুটিয়ে পড়বে। - .