পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের কবিতা 88(ł পুষ্প-উদার চৈত্ৰবনে বক্ষে ধরিস নিত্যধনে লক্ষ শিখায় জ্বলবে যখন দীপ্ত প্ৰদীপ অন্ধকারে । মাসিদের কোলে জীবনের আরম্ভেই মানুষের প্রথম তপস্যা দারিদ্র্যের- নগ্ন সন্ন্যাসীর স্নেহসাধনা । এই কুটিরে তারই কঠোর আয়োজন। আমি তো ঠিক করে রেখেছি, এই কুটিরের নাম দেব মাসতুতো ९ठी !” “বাবা, জীবনের দ্বিতীয় তপস্যা ঐশ্বর্যের, দেবীকে বা পাশে নিয়ে প্রেমসাধনা । এ কুটিরেও তোমার সে সাধনা ভিজে কাগজে চাপা পড়বে না। বর পাই নি বলে নিজেকে ভোলােচ্ছ ? মনে মনে নিশ্চয় জান পেয়েছ ।” এই বলে। লাবণ্যকে অমিতর পাশে দাড় করিয়ে তার ডান হাত অমিতার ডান হাতের উপর রাখলেন। লাবণ্যর গলা থেকে সোনার হারাগাছি খুলে তাই দিয়ে দুজনের হাত বেঁধে বললেন, “তোমাদের মিলন অক্ষয় হােক ৷” অমিত লাবণ্য দুজনে মিলে যোগমায়ার পায়ের ধুলো নিয়ে প্ৰণাম করলে। তিনি বললেন, “তোমরা একটু বোসো, আমি বাগান থেকে কিছু ফুল নিয়ে আসি গে।” বলে গাড়ি করে ফুল আনতে গেলেন। অনেকক্ষণ দুজনে খাটিয়াটার উপরে পাশাপাশি চুপ করে বসে রইল। এক সময়ে অমিতর মুখের দিকে মুখ তুলে লাবণ্য মৃদুস্বরে বললে, “আজ তুমি সমস্ত দিন (कष्ठ क्षी कळ ।” অমিত উত্তর দিলে, “কারণটা এত বেশি তুচ্ছ যে, আজকের দিনে সে কথাটা মুখে আনতে সাহসের দরকার। ইতিহাসে কোনোখানে লেখে না যে, হাতের কাছে বর্ষাতি ছিল না বলে বাদলার দিনে প্রেমিক তার প্রিয়ার কাছে যাওয়া মুলতবি রেখেছে। বরঞ্চ লেখা আছে সঁাতার দিয়ে অগাধ জল পার হওয়ার কথা । কিন্তু সেটা অন্তরের ইতিহাস, সেখানকার সমুদ্রে আমিও কি সঁাতার কাটছি নে ভাবছ। সে অকুল কোনোকালে কি পার হব । For we are bound where mariner has not yet dared to go, And we will risk the ship, ourselves and all. আমরা যাব যেখানে কোনো যায় নি নেয়ে সাহস করি, फूदि शनि (डी फूवि-ना कीኯ ডুবুক সবই, ডুবুক তরী। বন্যা, আমার জন্যে আজ তুমি অপেক্ষা করে ছিলে ?” “হাঁ মিতা, বৃষ্টির শব্দে সমস্ত দিন যেন তােমার পায়ের শব্দ শুনেছি। মনে হয়েছে, কত অসম্ভব দূর থেকে যে আসছ তার ঠিক নেই। শেষকালে তো এসে পৌছলে আমার জীবনে ৷” । “বন্যা, আমার জীবনের মাঝখানটিতে ছিল এতকাল তোমাকে-না-জানার একটা প্ৰকাণ্ড কালো গর্ত। ঐখানটা ছিল সব চেয়ে কুশ্রী । আজ সেটা কানা ছাপিয়ে ভরে উঠল- তারই উপরে আলো ঝলমল করে, সমস্ত আকাশের ছায়া পড়ে, আজ সেইখানটাই হয়েছে সব চেয়ে সুন্দর । এই-যে আমি ক্রমাগতই কথা কয়ে যাচ্ছি, এ হচ্ছে ঐ পরিপূর্ণ প্রাণসরোবরের তরঙ্গধবনি ; একে থামায় কে ৷” “মিতা, তুমি আজ সমস্ত দিন কী করছিলো।” “মনের মাঝখানটাতে তুমি ছিলে, একেবারে নিস্তব্ধ । তোমাকে কিছু বলতে যাচ্ছিলুম- কোথায় সেই কথা। আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ছে আর আমি কেবলই বলেছি, কথা দাও, কথা দাও ! k O, what is this? Mysterious and uncapturable bliss