পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুনশ্চ రి) সে যে মৃত্যুকে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং জীবনের সীমাকে করেছে অতিক্রম। তারা সেই ক্ষেত্র দিয়ে চলেছে যেখানে বীজ বোন হল, সেই ভাণ্ডারের পাশ দিয়ে যেখানে শস্ত হয়েছে সঞ্চিত, সেই অনুর্বর ভূমির উপর দিয়ে যেখানে কঙ্কালসার দেহ বসে আছে প্রাণের কাঙাল ; তারা চলেছে প্রজাবহুল নগরের পথ দিয়ে, . চলেছে জনশূন্যতার মধ্যে দিয়ে যেখানে বোবা অতীত তার ভাঙা কীর্তি কোলে নিয়ে নিস্তব্ধ ; চলেছে লক্ষ্মীছাড়াদের জীর্ণ বসতি বেয়ে আশ্রয় যেখানে আশ্রিতকে বিদ্রপ করে । রৌদ্রদগ্ধ বৈশাখের দীর্ঘ প্রহর কাটল পথে পথে । সন্ধ্যাবেলায় আলোক যখন স্নান তখন তারা কালজ্ঞকে শুধায়, ওই কি দেখা যায় আমাদের চরম আশার তোরণচূড়া। সে বলে, ন, ও যে সন্ধ্যাভ্ৰশিখরে অস্তগামী সূর্যের বিলীয়মান আভা । তরুণ বলে, থেমে না বন্ধু, অন্ধতমিক্স রাত্রির মধ্য দিয়ে আমাদের পৌছতে হবে মৃত্যুহীন জ্যোতিলোকে । অন্ধকারে তারা চলে । পথ যেন নিজের অর্থ নিজে জানে, পায়ের তলার ধূলিও যেন নীরব স্পর্শে দিক চিনিয়ে দেয়। স্বৰ্গপথযাত্রী নক্ষত্রের দল মূক সংগীতে বলে, সাথি, অগ্রসর হও। অধিনেতার আকাশবাণী কানে আসে, আর বিলম্ব নেই। ఏ প্রত্যুষের প্রথম আভা অরণ্যের শিশিরবষী পল্লবে পল্লবে ঝলমল করে উঠল। নক্ষত্রসংকেতবিদ জ্যোতিষী বললে, বন্ধু, আমরা এসেছি। পথের দুই ধারে দিক প্রাস্ত অবধি পরিণত শস্যশীর্ষ স্নিগ্ধ বায়ুহিল্লোলে দোলায়মান— আকাশের স্বর্ণলিপির উত্তরে ধরণীর আনন্দবাণী । গিরিপদবর্তী গ্রাম থেকে নদীতলবর্তী গ্রাম পর্যন্ত প্রতিদিনের লোকযাত্র শাস্ত গতিতে প্রবহমান—