পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Sክr রবীন্দ্র-রচনাবলী আমরা তামাশা দেখিতেছি। শত্রুপক্ষ হাসিতেছে। । i এতক্ষণে সকলে নিশ্চয় বুঝিয়াছেন পাবলিকের উপযোগিতা স্বীকার করি বলিয়াই আমি এত কথা বলিতেছি। এখন দেখিতে হইবে পাবলিক গঠন করিতে হইবে কী উপায়ে! সে কেবল পরস্পরকে সাহায্য করিয়া। হাতে কলমে প্রকৃত সাহায্য করিয়া। পরস্পর পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস করা চাই, পরস্পর পরস্পরের প্রতি নির্ভর করা চাই। মমতাসূত্ৰে সকলের একত্রে গাঁথা থাকা চাই। নতুবা, কাজের বেলায় কে কাহার তাহার ঠিকানা নাই, অথচ বক্তৃতা করিবার সময় বক্তা ওঝা মহাশয় মন্ত্ৰ পড়িয়া কোন বটবৃক্ষ হইতে যে পাবলিক ব্ৰহ্মদৈত্যটাকে সভাস্থলে নাবান তাহা ঠাহর পাওয়া যায় না। পরস্পরের মধ্যে বিশ্বাস, পরস্পরের প্রতি মমতা, পরস্পরের প্রতি নির্ভর- এ তো চাদা করিয়া রেজোলুশন পাস করিয়া হয় না। প্রত্যেকের ক্ষুদ্র কাজের উপর ইহার প্রতিষ্ঠা। এবং সে-সকল কাজ সকলেরই আয়ত্তাধীন। এখন সেই উদ্দেশ্যের প্রতি আমরা সকলে লক্ষ্য স্থির করি না কেন! অর্থাৎ যেখানে বাস করিতেছি, সেখানটা যাহাতে গৃহের মতো হয় তাহার চেষ্টা করি না কেন! নহিলে যে, বাহির হইতে যে-সে আসিয়া আমাদের সন্ত্রম হানি করিয়া যাইতেছে; এমন একটু স্থান পাইতেছি না। যাহা নিতান্ত আমাদেরই, যেখানে পরের কোনো অধিকার নাই, যেখানে আত্মীয়দের স্নেহের অমৃতে পুষ্টিলাভ করিয়া আমরা কার্যক্ষেত্রে প্রতিদিন দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ করিতে যাই, বাহির হইতে সঞ্চয় করিয়া যেখানে আনয়ন ও বিতরণ করি, আমাদের পিতামাতারা যেখানে আশ্রয় পাইয়াছিলেন, আমাদের সন্তানেরা যেখানে আশ্রয় পাইবে বলিয়া আমাদের ধ্রুব বিশ্বাস, যেখানে কেহ আমাদিগকে হীন জ্ঞান করিবে না, কেহ আমাদিগের প্রতি অবিচার করিবে না, কেহ আমাদিগের স্নানমুখ নতশির সহ্য করিতে পরিবে না, যেখানকার রমণীরা আমাদিগের লক্ষ্মীস্বরূপিণী আনন্দবিধায়নী অন্নপূর্ণ, যেখানকার বালক-বালিকারা আমাদেরই গৃহের আলোক আমদেরই গৃহের ভাবী আশা, যেখানে কেহ আমাদের মাতৃভাষা ন্যায় অকাতরে উপহাস ও উপেক্ষা করিবে না। আর কিছু নয়, সেই গৃহপ্ৰতিষ্ঠা, স্বদেশে সেই স্বদেশপ্রতিষ্ঠা, স্বদেশীয়ের প্রতি স্বদেশীয়ের বাহু প্রসারণ, এই আমাদের এখনকার ব্রত, এই আমাদের প্রত্যেকের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য। ইংরাজেরা আমাদিগকে সোহাগ করে কি না। করে তাহারই প্ৰতীক্ষা করা তাহার জন্য আবদার করিতে যাওয়া- সে তো অনেক হইয়া গেছে, এখন এই নূতন পথ অবলম্বন করিয়া দেখা যাক-না কেন। ভারতী ভাদ্রা-আশ্বিন ১২৯১ একটি পুরাতন কথা অনেকেই বলেন, বাঙালিরা ভাবের লোক, কাজের লোক নহে। এইজন্য তঁাহারা বাঙালিদিগকে পরামর্শ দেন practical হও। ইংরাজি শব্দটাই ব্যবহার করিলাম। কারণ, ওই কথাটাই চলিত। শব্দটা শুনিলেই সকলে বলিবেন, ‘হাঁ হাঁ, বটে, এই কথাটাই বলা হইয়া থাকে বটে। আমি তাহার বাংলা অনুবাদ করিতে গিয়া অনর্থক দায়িক হইতে যাইব কেন? যাহা হউক তাহাদের যদি DBB DBDS CLLLL DB DBB BBS DBDB DDB DBDS DDD DuDB DBBB বিবেচনা করিয়া কাজ করা, সাবধান হইয়া চলা, মোটা মোটা উন্নত ভাবের প্রতি বেশি আস্থা না রাখা, অর্থাৎ ভাবগুলিকে হাঁটিয়া ঠুটিয়া কার্যক্ষত্রের উপযোগী করিয়া লওয়া। খাটি সোনায় যেমন ভালো মজবুত৷ গহনা গড়ানো যায় না, তাহতে মিশাল দিতে হয়, তেমনি খাঁটি ভাব লইয়া সংসারের কাজ চলে না, তাহাতে খাদ মিশাইতে হয়। যাহারা বলে সত্য কথা বলিতেই হইবে, তাহারা sentimental লোক, কেতাব পড়িয়া তাহারা বিগড়াইয়া গিয়াছে, আর যাহারী