পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ref 8やりQ আছে এইজন্য ভয়ে ভয়ে তাড়াতাড়ি উভয়ের... দিলে মঙ্গল হয় না, সেই আকর্ষণকে যথানিয়মে মানবের কার্যে প্রয়োগ করা আবশ্যক। আমরা কোনো প্রাকৃতিক শক্তিকে লোপ করিতে পারি না, কিন্তু নিয়মিত করিয়া আপন কার্যে লাগাইতে পারি। বিদ্যাসুন্দর এবং আমাদের সাধারণ প্রচলিত প্ৰেমগান হইতে এই প্রমাণ হয় যে, সমাজনিয়মের শাসন সত্ত্বেও প্ৰেম আমাদের হৃদয় হইতে লুপ্ত হয় নাই, কেবল সূর্যকিরণের অভাবে কলুষিত হইয়া গিয়াছিল। আকাঙ্ক্ষা হৃদয়ে হৃদয়ে বিরাজ করিতেছিল, কেবল তাহা মুক্ত আকাশের অধিকার হইতে বঞ্চিত হইয়া কুঞ্চিত কীটের ন্যায় মৃত্তিকাতলে সহস্র গহবর খোদিত করিয়াছিল। হেয় বিকৃত অমরতা লাভ করিয়া সে তলে তলে সমাজকে ধ্বংসের পথে আকর্ষণ করিতেছিল। SV/> y) / d brbrbr পারিবারিক স্মৃতিলিপি পুস্তক CHIVALRY কুমারী Mary-র প্রতি ভক্তি যুরোপে স্ত্রীসম্মানের এক প্রধান কারণ বলিয়া উল্লিখিত হয়। কিন্তু আমাদের দেশে শাক্তদের মধ্যে chivalry-র প্রচলন হয় নাই কেন ? chivalry-র মধ্যে যে সম্মানের ভাব আছে তাহা প্রেমের সম্মান তাহা ভক্তির সম্মান নহে। সুকুমার সৌন্দর্যের প্রতি যে একটি সযত্নসম্রম ভাবের উদয় হয় chivalry তাহাই। আমাদের দেশে স্ত্রীলোকের প্রতি যে সম্মান আছে, তাহা জননীভাবে, দেবীভাবে। তাহার কারণ, কেবলমাত্র পতিব্ৰতা সতী এবং জননী এই দুইভাবে আমাদের স্ত্রীলোকেরা ভক্তির যোগ্য। তাহারা কোনোকালে কুমারী বা সুন্দরী নহে— সুন্দরী না হওয়াটার অর্থ এই যে, সাধারণের মধ্যে তাঁহাদের সৌন্দর্যের কোনো কার্য নাই। আমাদের দেশে কুমারী শিশু আছে কিন্তু কুমারী স্ত্রীলোক নাই। সুতরাং স্ত্রীপুরুষ মাত্রেরই মধ্যে যে একটি স্বাভাবিক প্রেমের সম্বন্ধ তাহা এদেশে জন্মিতে পারে নাই। প্ৰেম আকর্ষণই স্ত্রীলোকের প্রধান বল; যে সমাজে স্ত্রীলোক প্ৰেম উদ্রেক করিতে পারে সেই সমাজেই স্ত্রীলোক প্রকৃত আত্মশক্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত। যে সমাজে সেই প্রেম উদ্রেকের বাধা আছে সেইখানে স্ত্রীলোকের প্রধান বল অপহরণ করা হইয়াছে। স্ত্রী বলিয়া নহে, জননী, বলিয়া নহে, স্ত্রীলোক বলিয়াই স্ত্রীলোকের একটি মাহাত্ম্য আছে, সে মাহাত্ম্য পুরুষের হৃদয়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত; কেবলমাত্র গাৰ্হস্থ্যের মধ্যে রুদ্ধ] থাকিলে স্ত্রীলোক সেই আপন রাজ্য হইতে সিংহাসন হইতে বঞ্চিত হয়। কেবল সতী বা জননীভাবে এক প্রকার দূরস্থিত মৃদু ভক্তি থাকিতে পারে, কিন্তু সেভাবে ধন মন জীবন সমর্পণ করা যায় না। কিন্তু পুরুষ স্ত্রীলোকের জন্য ধন মন জীবন দান করিবে প্রকৃতিতে এইরূপ কথা আছে, স্বভাব শাস্ত্রে এইরূপ বিধান আছে। সুতরাং আত্মোৎসর্গের জন্য হৃদয় উন্মুক্ত হয় ত্ৰিয়মাণ হইয়া থাকে নয় নানাবিধ গোপন পথ অবলম্বন করে। যুরোপীয় সমাজে স্ত্রীলোকের প্রতি স্বাভাবিক আত্মোৎসর্গ হইতে সহস্ৰ মানবকার্যের জন্য আত্মোৎসর্গ শিক্ষা হয়। স্বাভাবিক পদ্ধতি ত্যাগ করিয়া কেবল শুষ্ক ধর্মোপদেশ দ্বারা লোকের ধন মন প্ৰাণ কড়িতে পারা যায় না। আমাদের দেশের লোকেরা উক্ত তিনটে পদার্থ গর্ত খুঁড়িয়া কত সযত্নে সঞ্চয় করিয়া রাখে। সুদৃঢ় অভ্যাসবশত এক প্রকার দাসের মতো প্ৰাণ দেওয়া যায় বটে, কিন্তু স্বাধীনভাবে প্ৰাণ দিবার শিক্ষা কেবল প্রেম হইতেই হয়। নানা কারণে আমার মনে হয় না যে দেবভক্তি হইতে chilvary-র উৎপত্তি। আমাদের দেশে শাক্তদের মধ্যে কৃত্ৰিম কুমারী পূজা আছে কিন্তু প্ৰকৃত কুমারী পূজা নাই। যেখানে স্ত্রীলোক রুদ্ধ নহে chivary-র জন্ম। chilvary অন্ধ পশুবলের উপরে সৌন্দর্যের জয়লাভ সৌন্দর্যের স্বাভাবিক কাৰ্যই তাই। স্বাধীনতা লাভ করিয়া স্ত্রীলোক সবল হয় এবং সবলতা লাভ Sc || \