পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विदिक्ष drዒd: سمی G ব্যাপ্ত হইলে যাহা অন্ধকার, সংহত হইলে তাহ আলোক, আরও সংহত হইলে তাহ অগ্নি। বৃহত্ত্বই জড়ত্ব। সংক্ষেপ সংহতিই প্ৰাণ। সংহত হইলেই তেজ, প্ৰাণ, আকার, ব্যক্তি, জাগ্রত হইয়া উঠে। আমরা জড়োপাসক শক্তি-উপাসক বলিয়া বৃহত্ত্বর উপাসনা করিয়া থাকি। বৃহত্ত্ব অভিভূত হইয়া যাই। কিন্তু বৃহৎ অপেক্ষা ক্ষুদ্র অধিক আশ্চর্য। হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন বাষ্পরাশি অপেক্ষা এক বিন্দুজল আশ্চৰ্য। সুবিস্তুত নীহারিক অপেক্ষা সংক্ষিপ্ত সৌরজগৎ আশ্চৰ্য। আরম্ভ বৃহৎ পরিণাম ক্ষুদ্র। আবর্তের মুখ অতি বৃহৎ আবর্তের শেষ একটি বিন্দুমাত্র। সুবিশাল জগৎ ঘুরিয়া ঘুরিয়া এই ক্ষুদ্রত্বের দিকে বিন্দুত্বের দিকে যাইতেছে কি না কে জানে! কেন্দ্রের মহৎ আকর্ষণে পরিধি সংক্ষিপ্ত হইয়া কেন্দ্ৰত্বে আত্মবিসর্জন করিতে যাইতেছে কি না কে জানে! V যত বৃহৎ হই তত দেশকালের অধীন হইতে হয়। আয়তন লইয়া আমাদিগকে কেবল যুদ্ধ করিতে হয়। কাহার সঙ্গে? দানব-কাল ও দানব দেশের সঙ্গে। দেশকাল বলে- আয়তন আমার; আমার জিনিস আমাকে ফিরাইয়া দাও। অবিশ্রাম লড়াই করিয়া অবশেষে কড়িয়া লয়। শ্মশানক্ষেত্রে তাহার ডিক্রিজারি হয়। আমাদের ক্ষুদ্র আয়তন মহা আয়তনে মিশিয়া যায়। A কিন্তু আমরা জানি আমরা মৃত্যুকে জিতিব। অর্থাৎ দেশকালকে অতিক্রম করিব। মনুল্যের অভ্যন্তরে এক সেনাপতি আছে সে দৃঢ়বিশ্বাসে যুদ্ধ করিতেছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মরিতেছে কিন্তু যুদ্ধের বিরাম নাই। অনেক মরিয়া। তবে বাঁচিবার উপায় বাহির হইবে। আমরা সংহতিকে অধিকার করিয়া ব্যাপ্তিকে জিতিব- মনুষ্যত্বের এই সাধনা। সংহতিকে অধিকার করাই শক্ত। আমাদের হৃদয় মন বাম্পের মতো চারি দিকে ছড়াইয়া আছে। হু হু করিয়া ব্যাপ্ত হইয়া পড়া যেমন বাম্পের স্বাভাবিক গুণ- আমরাও তেমনি স্বভাবতই চারি দিকে বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়ি- অভ্যন্তরে সুদৃঢ় আকর্ষণ শক্তি না থাকিলে আমার হইয়া আমরা পর হইয়া যাই। আমাকে বিন্দুতে নিবিষ্ট করাই শক্ত। যোগীরা এই বিন্দুমাত্রে স্থায়ী হইবার জন্য বৃহৎ সংসারের আশ্রয় ছাড়িয়াছেন। সূচ্যগ্রন্থানের জন্যই তাহদের লড়াই। তাহারা বিন্দুর বলে ব্যাপককে অধিকার করবেন। সং বলে বিকীর্ণতা লাভ করবেন। s · সংহত দীপশিখা তাহার আলোকে সমস্ত গৃহ অধিকার করে। কিন্তু সেই শিখা যখন প্রচ্ছন্ন উত্তাপ আকারে গৃহের কাঠে, উপকরণে ইতস্তত ব্যাপ্ত হইয়া থাকে তখন গৃহই তাহাকে বধ করিয়া রাখে, সে জাগিতে পায় না। যতটা ব্যাপ্ত হইব ততটা অধিকার করিব এইরূপ কেহ কেহ মনে করেন। কিন্তু ইহার উল্টাটাই ঠিক। অর্থাৎ যতটা ব্যাপ্ত হইবে তুমি ততই অধিকৃত হইবে। কিন্তু চারি দিক হইতে আপনাকে প্রত্যাহার করিয়া যখন বহ্নিশিখার মতো স্বতন্ত্র দীপ্তি পাইবে, তখন তোমার সেই প্রখর স্বাতম্যের জ্যোতিতে চারি দিক উজ্জ্বল রূপে অধিকার করিতে পরিবে: এইয়াপ কহিরো কাহারো মত। 早, . . So সংহতি, অর্থাৎ অধ্যাত্মযোগ। যুরোপীয়েরা প্রকৃতির সহিত সন্ধি করিতে চান, ভারতবষীয়েরা থকৃতিকে জয় করা যায়। এই কি যোগশাস্ত্র?