পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 ब्रदीक्ष-शष्नायकी রাজবিশ্বাস এবং কৃতজ্ঞতা রক্ষা করিতে হইলে, তাহদের আর্থিক ও নৈতিক অবস্থার উন্নতি সাধন করিতে হইলে, সমস্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বাণিজ্য ও শিল্পের বহুল পরিমাণে বিস্তার করিতে হইলে ১৮৩৩ খৃস্টাব্দের অ্যাক্টের প্রতিজ্ঞা সকল, সিপাই বিদ্রোহের পর ১৮৫৮ খৃস্টাব্দের ঘোষণাপত্র, দিল্লির দরবারে সম্রাজী উপাধিধারণকালীন ১৮৭৭ খৃস্টাব্দের ঘোষণাপত্র, এবং মহামহিমান্বিতা রাজী ও ভারতসম্রাজ্ঞীর পঞ্চাশৎবার্ষিক রাজ্যাভিষেক উৎসব-ঘোষণাপত্রগুলির পুনঃপ্রতিশ্রুতি অনুসারে, রাষ্ট্রনীতির অন্যান্য সংস্কার সাধনের মধ্যে, ৩রা জুন ১৮৯৩ খৃস্টাব্দে বর্তমান সভা -কর্তৃক নিম্নলিখিত রেজোলুশন গ্রাহ্য হইয়াছিল তাহাকে কার্যে পরিণত করা যে, এ পর্যন্ত ভারতবষীয় সিবিল সর্কিস পদপ্রাপ্তির জন্য একমাত্র ইংলন্ডে যে প্রকাশ্য পরীক্ষাসকল নির্ধারিত ছিল এক্ষণ হইতে তাহা ভারতবর্ষ এবং ইংলন্ড উভয়ত্রই সম্পাদিত হইতে থাকিবে- এই সকল পরীক্ষা উভয় দেশেই সমান প্রকৃতির হইবে এবং যাহারা পরীক্ষা দিবেন। তাহারা সকলেই যোগ্যতা অনুসারে এক তালিকায় শ্রেণীভুক্ত হইতে থাকিবেন। মতের আশ্চর্য ঐক্য পাঠকদের স্মরণ আছে বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদের প্রথম বার্ষিক অধিবেশন সভায় সাধন”- সম্পাদক “বাংলা জাতীয় সাহিত্য” নামক একটি প্ৰবন্ধ পাঠ করিয়াছিলেন। গত জ্যৈষ্ঠ মাসের “সাহিত্য’ পত্রে আমাদের বান্ধব শ্ৰীমান যোগিনীমোহন চট্টোপাধ্যায় তাহার প্রতিবাদ করিয়া আমাদিগকে সম্মানিত করিয়াছেন। তিনি অত্যন্ত সরলভাবে অনুমান” করিয়া লইয়াছেন যে, যাহাতে ‘গ্রন্থকারদের ভিক্ষার থলিতে কিঞ্চিৎ অর্থ সমাগমেরও সম্ভাবনা হয়’ আমাদের পঠিত প্রবন্ধের এমন গোপন উদ্দেশ্যও থাকিতে পারে। আমাদের ‘মাতৃভাষাবৎসলতার ঠাট" যে “অলীক' তাহাও তাহার। সুতীব্রু এবং উদার অনুমানশক্তির নিকট ধরা পড়িয়াছে। এ সম্বন্ধে শ্ৰীমান যোগিনীমোহনের প্রতি আমাদের একটিমাত্র বক্তব্য আছে- নানা স্বাভাবিক কারণে মাতৃভাষার প্রতি আমাদের অনুরাগ অন্ধ এবং পক্ষপাতবিশিষ্ট হইতে পারে। কিন্তু তাহা অলীক এ কথা প্ৰকাশ করিয়া তিনি যে কেবল আমাদের প্রতি অন্যায় অসম্মান প্ৰদৰ্শন করিয়াছেন তাহা নহে; সত্যের প্রতি যে-সকল ভদ্রজনের স্বাভাবিক ভক্তি আছে তাহারা অন্যকে অকারণে এরাপ অপবাদ দিতে অত্যন্ত কুষ্ঠিত বোধ করে। মতের ঐক্য আমরা সকলেরই কাছে প্রত্যাশা করিতে পারি না, অতএব শ্ৰীমান যোগিনীমোহন আমাদের বিরুদ্ধবাদী হইলে আমরা কিছুমাত্র বিস্মিত হইতাম না। কিন্তু প্ৰকৃত আশ্চর্যের বিষয় এই যে, তিনি কোথাও আমাদের কিছুমাত্র প্রতিবাদ করেন নাই। বাংলা ভাষা বাঙালি জাতির ভাষা; তাহা যে ভারতবর্ষের নানা বিভিন্ন জাতির ভাষা হইবে। এ কথা আমরা বলি নাই। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ইংরাজি ভাষা ও সাহিত্যের অপেক্ষা কোনো অংশে শ্রেষ্ঠ অথবা বঙ্গদেশে ইংরাজি শিক্ষা উঠিয়া গিয়া বাংলা শিক্ষা প্রচলিত হউক এমন কথারও আমরা কুত্ৰাপি আভাস দিই নাই, অতএব আমাদের প্রবন্ধের প্রতিবাদচ্ছলে যোগিনীমোহন ইংরাজি ভাষা ও সাহিত্যের শ্ৰেষ্ঠতা সম্বন্ধে যে প্ৰবন্ধ প্ৰকাশ করিয়াছেন তাহার সহিত আমাদের বিশেষ মতবিরোধ নাই এবং উক্ত চিন্তাশীল সারগর্ভ রচনা ‘সাহিত্য’ পত্রে প্রকাশিত হইবার পূর্বেও ছিল না। ইংরাজি ভাষা শিক্ষা এই প্রসঙ্গে ইংরাজি ভাষা শিক্ষা সম্বন্ধে আমাদের একটি বক্তব্য প্রকাশ করিতে ইচ্ছা করি। ভাষা শিক্ষা ও বিয়ায় শিক্ষা উভয়ই ছাত্রদের পক্ষে অত্যাবশ্যক- কিন্তু বিদেশী ভাষা যথাকথঞ্চিৎ