পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సా\e রবীন্দ্র-রচনাবলী পুরাতন ভৃত্য ভূতের মতন চেহারা যেমন, নির্বোধ অতি ঘোর, য-কিছু হারায়, গিন্নি বলেন, ‘কেষ্ট বেটাই চোর।’ উঠিতে বসিতে করি বাপান্ত, শুনেও শোনে না কানে । যত পায় বেত না পায় বেতন, তবু না চেতন মানে। বড়ো প্রয়োজন, ডাকি প্রাণপণ, চীৎকার করি কেষ্টা’— যত করি তাড়া, নাহি পাই সাড়া, খুজে ফিরি সারা দেশটা ৷ একখানা দিলে নিমেষ ফেলিতে তিনখান ক’রে আনে । তিনখানা দিলে একখানা রাখে, বাকি কোথা নাহি জানে । যেখানে সেখানে দিবসে দুপুরে নিদ্রাটি আছে সাধা— মহাকলরবে গালি দেই যবে ‘পাজি হতভাগা গাধা’ দরজার পাশে দাড়িয়ে সে হাসে, দেখে জলে যায় পিত্ত ! তবু মায়া তার ত্যাগ করা ভার— বড়ে পুরাতন ভূত্য । ঘরের কত্রী রুক্ষমূর্তি বলে, আর পারি নাকে ! রহিল তোমার এ ঘর দুয়ার, কেষ্টারে লয়ে থাকে । না মানে শাসন, বসন বাসন অশন আসন যত কোথায় কী গেল ! শুধু টাকাগুলো যেতেছে জলের মতো । গেলে সে বাজার সারা দিনে আর দেখা পাওয়া তার ভার— করিলে চেষ্টা কেষ্ট ছাড়া কি ভৃত্য মেলে না অার ” শুনে মহা রেগে ছুটে যাই বেগে, আনি তার টিকি ধরে ; বলি তারে, পাজি, বেরে তুই আজই, দূর করে দিতু তোরে ? ধীরে চলে যায়, ভাবি গেল দায় ; পরদিনে উঠে দেখি হু কাটি বাড়ায়ে রয়েছে দাড়ায়ে বেটা বুদ্ধির ঢেকি— প্রসন্নমুখ, নাছি কোনো দুখ, অতি-অকাতর-চিত্ত ! ছাড়ালে না ছাড়ে, কী করিব তারে মোর পুরাতন ভৃত্য । সে বছরে ফক পেছু কিছু টাকা করিয়া দালালগিরি। করিলাম মন শ্ৰীবৃন্দাবন বারেক আসিব ফিরি।