পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| झङ्कत्र ৪৬৩ নালিশ করিতে থাকে ; সে নালিশ বিধাতা শোনেন না বলিয়াই রক্ষা, কিন্তু যারা শোনে তাদের ধৈর্য থাকে না। । 1 A" একদিন যখন ছাদের কোণে একটা ভাঙা হাড়িতে দামিনী ফুলগাছের চর্চা করিতেছে এমন সময় শচীশ তাকে গিয়া জিজ্ঞাসা করিল, আজকাল তুমি ওখানে যাওয়া একেবারে ছাড়িয়া দিয়াছ কেন ? কোনখানে ? গুরুজির কাছে । কেন, আমাকে তোমাদের কিসের প্রয়োজন ? প্রয়োজন আমাদের কিছু নাই, কিন্তু তোমার তো প্রয়োজন আছে। দামিনী জলিয়া উঠিয়া বলিল, কিছু না, কিছু না ! শচীশ স্তম্ভিত হইয়া তার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। কিছুক্ষণ পরে বলিল, দেখে, তোমার মন অশাস্ত হইয়াছে, যদি শাস্তি পাইতে চাও তবে--- তোমরা আমাকে শান্তি দিবে ? দিনরাত্রি মনের মধ্যে কেবলই ঢেউ তুলিয়৷ তুলিয়া পাগল হইয়া আছ, তোমাদের শাস্তি কোথায় ? জোড়হাত করি তোমাদের রক্ষা করে আমাকে— আমি শাস্তিতেই ছিলাম। আমি শান্তিতেই থাকিব । শচীশ বলিল, উপরে ঢেউ দেখিতেছ বটে, কিন্তু ধৈর্য ধরিয়া ভিতরে তল।ইতে পারিলে দেখিবে সেখানে সমস্ত শাস্ত । দামিনী দুই হাত জোড় করিয়া বলিল, ওগে, দোহাই তোমাদের, আমাকে আর তলাইতে বলিয়ে না। আমার আশা তোমরা ছাড়িয়া দিলে তবেই আমি বঁচিব । २ নারীর হৃদয়ের রহস্য জানিবার মতে অভিজ্ঞতা আমার হইল না। নিতান্তই উপর হইতে, বাহির হইতে, যেটুকু দেখিলাম তাহাতে আমার এই বিশ্বাস জন্মিয়াছে যে, যেখানে মেয়েরা দুঃখ পাইবে সেইখানেই তার হৃদয় দিতে প্রস্তুত । এমন পশুর জন্য তারা আপনার বরণমালা গাথে যে লোক সেই মালা কামনার পাকে দলিয়৷ বীভৎস করিতে পারে ; আর তা যদি না হইল তবে এমন কারও দিকে তারা লক্ষ্য করে যার কণ্ঠে তাদের মালা পৌছায় না, যে মানুষ ভাবের সূক্ষ্মতায় এমনি মিলাইয়াছে যেন নাই বলিলেই হয়। মেয়ের স্বয়ম্বর হইবার বেলায় তাদেরই বর্জন করে যারা আমাদের মতে মাঝারি মানুষ, যারা স্থলে স্থক্ষ্মে মিশাইয়া তৈরি— নারীকে যারা নারী বলিয়াই জানে, অর্থাৎ, এটুকু জানে যে, তারা