পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& ა® রবীন্দ্র-রচনাবলী می জনকে স্কন্ধে করিয়া হামাগুড়ির ভঙ্গিতে নিশ্চল দাড়াইয়া থাকা কঠিন ব্যাপার! সেই জন্য উকিল-খরচ-কথনের মধ্যে সিংহ একবার গর্জন করিয়া উঠিবে, মা, আমার ক্ষুধা পাইয়াছে।’ মা বলিবেন, ‘তা, যাও বাছ, সাহারা মরুতে তোমার শিকার ধরিয়া খাও গে, আমরা নীচে নামিয়া বসিতেছি । হামাগুড়ি দিয়া সিংহ নিস্ক্রাস্ত হইবে। এই সুযোগে দর্শকের সিংহের আবাসস্থলের পরিচয় পাইবেন – আমার কোনো কোনো নব্যবন্ধু পরামর্শ দিয়াছিলেন, ইহার মধ্যে মধ্যে নন্দীভূঙ্গীর হাস্যরসের অবতারণা করিলে ভালো হয়। কিন্তু তাহা হইলে নাটকের গৌরব-লাঘব হয় । এইজন্ত হস্তপ্ৰগল্‌ভত আমি সযত্নে দূরে পরিহার করিয়াছি। ভবিষ্যতে সুশ্রত ও চরক -সংহিতা নাট্যাকারে রচনা করিবার অভিলাষ আছে এবং উপন্যাসের ন্যায় লঘু সাহিত্যকে কতদূর পর্যন্ত সারবান করিয়া তোলা যাইতে পারে পাঠকদিগকে তাহারও কিঞ্চিৎ নমুনা দিবার সংকল্প করিয়াছি। ভবদীয় একান্ত অতুগত শ্ৰীজনহিতৈষী সাহিত্যপ্রচারক মীমাংসা আমাদের বাড়ির পাশেই নবীন ঘোষের বাড়ি । একেবারে সংলগ্ন বলিলেই হয় । আমি কখনো আমাদের বাড়ির ছাদে উঠি না, জানালায়ও দাড়াই না । আপন মনে গৃহকার্য করিয়া যাই । নবীন ঘোষের বড়ো ছেলে মুকুন্দ ঘোষকে কখনো চক্ষে দেখি নাই। কিন্তু মুকুন্দ ঘোষ কেন বঁাশি বাজায় ! সকালে বাজায়, মধ্যাহ্নে বাজায়, সন্ধ্যাবেলায় বাজায় । আমার ঘর হইতে স্পষ্ট শোনা যায়। আমি কবি নই, মাসিক পত্রিকার সম্পাদক নই, মনের ভাব সম্পূর্ণ ব্যক্ত করিয়া উঠিতে পারি না । কেবল সকালে কঁাদি, মধ্যাহ্নে কাদি, সন্ধ্যাবেলায় কাদি এবং ইচ্ছা করে ঘর ছাড়িয়া বাহির হইয়া যাই । বুঝিতে পারি রাধিক কেন তাহার সর্থীকে সম্বোধন করিয়া কাতর স্বরে বলিয়াছিলেন বারণ কর লো সই, আর যেন শুামের বঁশি বাজে না বাজে না । Жанышы.