পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনেকক্ষণ উভয়ে নিস্তন্ধ রহিলেন, অনেকক্ষণ পর চারণ পনেরায় কহিলেন-দেবি যেদিন আমাকে তেজসিংহ এই গীত শিখাইয়াছিলেন, সেইদিন এই সবণ অঙ্গরীয়টা আমাকে দেখাইয়া আজ্ঞা করিয়াছিলেন—গীতোল্লিখিতা বীরনারীর সহিত যদি কখনও দেখা হয়, আমার সত্যের নিদশনস্বরুপ এই অঙ্গরীয়ট তাঁহাকে দিও। অদ্য দেবীকে দেখিতে পাইলাম, যদি আদেশ করেন, যদি ধষ্টতা মাজনা করেন, ঐ অঙ্গলীতে অঙ্গরীয়ট পরাইয়া দি ! লৎজাবতী পপ সেই দেবনিন্দিত তরুণবয়স্ক চারণের দিকে চাহিলেন, ঈষৎ কল্পিত হইয়া হস্তপ্রসারণ করিলেন। তাহার দেহলতা কাঁপতেছিল কি জন্য ? চারণদেব ধীরে ধীরে সেই অঙ্গরীয় পরাইয়া দিলেন, সেই পাপবিনিন্দিত কোমল হস্ত অনেকক্ষণ আপন হন্তে ধারণ করিয়া রাখলেন। পাপ নয়ন মাদিত করিয়াছিলেন, পপের বোধ হইল যেন চারণের দীর্ঘ নিশ্বাস তাঁহার হস্তের উপর পড়িতেছে, যেন চারণের তপ্ত ওষ্ঠ সে হস্ত একবার পশ করিল। প্রকৃতই কি চারণদেব এই ধষ্টতা প্রকাশ করিলেন ? না, এ কেবল পাপকুমারীর কল্পনামাত্র ? পম্পে চাহিলেন, পনরায় সেই দেববিনিন্দিত বপুঃ ও উদার মুখমণ্ডল দেখিলেন, সেই চন্দ্রকরোজবল বিশালনয়ন দেখিলেন, ঈষৎ চেষ্টা দ্বারা হস্ত ছাড়াইয়া লইলেন। মহেনত্তের জন্য পম্পের ললাট ও সমস্ত বদনমণ্ডল রক্তোচ্ছনাসে রঞ্জিত হইল । চিত্তসংযম করিয়া পাপ পাববং অকম্পিত্যবরে কহিলেন;–চারণদেব ! সে বীরপরষকে প্রতিদান করিতে পারি, এরপ অলঙ্কার আমার নাই। কিন্তু যদি তাঁহার সহিত আপনার সাক্ষাৎ হয়, অভাগিনীর নিদশনস্বরুপ এই পাপটি তাঁহাকে দান করিবেন। অন্টাদশ পরিচ্ছেদ ঃ বন্যপাপ গাঢ়োৎক-ঠাং গরে্ষ দিবসেবেষক গচ্ছৎসবোলাং। জাতাং ভন্যে শিশিরমথিতাং পদ্মিনীং বাহনারপোম ॥ —মেঘদতম। রজনী শেষ প্রায়, এরপে সময়ে তেজসিংহ সময"মহল পর্বত হইতে অবতরণ করিয়া চারণের বেশ ত্যাগ করিয়া ভীমচাঁদের পালের নিকট হইতে সেই পৰ্বতত্ত্বদে প্রাতঃস্নান করিতে গমন করিলেন। নিকটে আসিয়াছেন এরপে সময়ে হ্রদতট হইতে ভীল-ভাষায় একটী গীত শুনিতে পাইলেন। এই নিন্তব্ধ রজনীতে কে গীত গাইতেছে ? উৎসকে হইয়া তিনি হ্রদপাশ্বাস্থ একটী ঝোপের ভিতর যাইলেন, দেখিলেন, একটী তুঙ্গ প্রস্তররাশির উপর সেই চন্দ্রালোকে একজন বালিকা বন্যফল চয়ন করিতেছে ও মধ্যে মধ্যে গীত গাইতেছে। বিস্মিত হইয়া চিনিলেন, সে ভীমচাঁদের কন্যা। তেজসিংহ ক্ষণেক দাঁড়াইয়া থাকিয়া ডাকিলেন-বালিকা ! বালিকা তাঁহার দিকে দেখিয়া হাস্য করিয়া বলিল,—আমি তোমার জন্য বনের ফল | তেজসিংহ। এ কি বালিকা ! এত রাত্রে একাকী এস্থানে ফল তুলিতেছিস কেন ? আমার সঙ্গে ঘরে আয় । বালিকা। এই তুমি পাপ ভালবাস, তোমার জন্য পাপ তুলিয়াছি। বালিকা হাসিয়া ! তেজসিংহ ভ্ৰকুটী করিলেন; কিছল বুঝিতে পারলেন না। বালিকা পনরায় হাস্য করিয়া কহিল,—আমার এ মালা লইবে না ? তেজসিংহ। লইব বৈকি, দে না । বালিকা। আমি পরাইয়া দিব। তেজসিংহ। দে, পরে বাড়ী আয়। ఫిపి ఫి