পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रटभश्च ब्रछनाबलौ বের জন্য কত হাঁটাহাটি করেছিল, শেষে বড় বেী একদিন আমাকে ডেকে বললেন, অমনি কাজটা হয়ে গেল। কেমন বে দিয়ে দিয়েছি, রায়েদের বনিয়াদি ঘর, খাবার অভাব নেই, টাকার অভাব নেই, যেন কুবেরের ঘর সেই ঘরের ছেলের সঙ্গে ঘোষেদের মেয়ের বের সম্প্রবন্ধ করে দিলেম। ছেলেটী দোজবরে বটে, আর একটা কাহিল ও একটু বয়স নাকি হয়েছে, তা এখনও চল্লিশের বড় বেশী হয়নি, আর কালীতারা আট বৎসরের হলেও দেখতে বাড়ন্ত, গ্রামসদ্ধ এ সম্বন্ধের সংখ্যাতি করছে। ছেলেটী বদ্ধমানে থাকে, লেখাপড়া না জানকে তার মান কত, যশ কত, বলে, হাঁ, জমীদারের ঘরের ছেলে বটে। তা আমরা হাত না দিলে কি এমন সবন্ধ হয় ? তুমি মা এত দিন কোথা হাঁটাহাটি করছিলে, আমাদের একবার জিজ্ঞাসাও কর না, এখন ষে যার আপন আপন প্রভু হয়েছে, তাতে কি কাজ চলে ? তা আজ আমাকে মনে পড়েছে, তব ভাল।” সজল নয়নে বিন্দরে মা আপনার দোষ স্বীকার করিলেন, এবং এমন লোকের নিকট পাবে না আসা বড়ই নিব্বদ্ধিতার কায্য হইয়াছে ভাবিলেন। আশ্রজেল ও মিনতিতে তুষ্ট হইয়া গ্রামের মণ্ডল বলিলেন, “তা ভেব না মা, এখন আমাকে যখন বললে, তখন আর ভাবনা নেই, দুই চারি দিনের মধ্যে সম্ববন্ধ স্থির করে দিচ্ছি।” বিন্দরে মা আকাশের চাঁদ হাতে পাইলেন, অনেক আশা করিয়া আহারনিদ্রা ছাড়িয়া অপেক্ষা করিতে লাগিলেন। কিন্তু দুই চারি দিন অতীত হইল, দুই চারি মাস অতীত হইল, বিন্দরে সম্বন্ধ হইল না, গরিবের মেয়ে তাঁরল না। বিন্দর মা দেখিলেন, তালপুকুরের লোক অনেক সদগণবিশিষ্ট বটে। নিঃসবাথ হইয়া পরের বাড়ী কি রান্না হইতেছে, প্রত্যহ তাহার খবর রাখেন; পরের বোঝি কি করিতেছে, তাহার বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান রাখেন; ঘরে ঘরে গ্রামে গ্রামে সে বৈজ্ঞানিক সংবাদ প্রচার করিবার জন্য নিঃসবাথ যত্ন করেন; কেহ বিপদে পড়িলে বা দায়ে ঠেকিলে তাহাকে পর্বে দোষের জন্য বিশেষরাপে নীতিগভ তিরস্কার দেন, নৈতিক উপদেশ দেন, এবং নিঃসবাথরুপে তাহাকে আশ্বাস দিতে, পরামর্শ দিতে যত্ন বা বাক্যব্যয়ে রন্টী করেন না; তবে কাজের সময় সহায়তা করা—সে স্বতন্ত্র কথা ! বিন্দরে মাতাকে এই দায় হইতে উদ্ধার করিবার জন্য কেহ হস্ত প্রসারণ করিলেন না, তাঁহার যাচঞায় কেহ একটী কপদক দিলেন না, তাঁহার উপকারাথে কেহ বাম পদের কনিষ্ঠ অঙ্গলী নাড়িলেন না। বিন্দরে মা যদি কখনও তালপুকুর হইতে বাহিরে যাইতেন, তবে দেখিতেন, এ সদগণেগুলি জগতের অন্যান্য স্থানেও লক্ষিত হয়। তবে বিন্দরে মাতা নিবোধ, এক একবার তাঁহার মনে এরপ উদয় হইত না যে এ প্রচুর আশ্বাসবাক্য ও সৎপরামশের পরিবত্তে তাঁহাকে এই সামান্য দায় হইতে কেহ উদ্ধার করিয়া দিলে তাঁহার নৈতিক উন্নতি না হউক, সাংসারিক সুখ কতক পরিমাণে হইত। তালপুকুর গ্রামে হরিদাসের একজন পরম বন্ধন ছিলেন। তাঁহার হেমচন্দ্র নামক একটী পত্র ভিন্ন সংসারে আর কেহ ছিল না। পিতা দরিদ্র হইলেও পত্রকে অনেক ষত্নে লেখাপড়া শিখাইবার চেষ্টা করিয়াছিলেন, এবং হেমচন্দ্রও যক্ষ সহকারে পাঠ করিয়া বদ্ধমানে প্রথম পরীক্ষা দিয়া কলিকাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িতে গিয়াছিলেন। কিন্তু তাহার কয়েক মাসের পরই পিতার মৃত্যুসংবাদ পাইয়া তিনি পড়াশনা বন্ধ করিয়া তালপুকুরে ফিরিয়া আসিলেন এবং সামান্য পৈতৃক সম্পত্তিতে জীবন নিৰ্বাহ করিতে লাগিলেন। হেমচন্দ্র বসু বিন্দর মা ও বিন্দকে বাল্যকাল অবধি জানিতেন। তাঁহার বিষয়বৃদ্ধি কিছ অলপ থাকা বশতঃই হউক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্ময়কর বিদ্যা কয়েক মাসাবধি শিখিয়াই হউক, অথবা কলিকাতার বাতাস পাইয়াই হউক, তিনি পিতার পরম বন্ধ হরিদাসের দরিদ্রকন্যাকে বিবাহ করিবার প্রস্তাব করিলেন। সমস্ত গ্রাম এ মাঢ়ের ন্যায় কায্যে চমকিত হইল, হেমচন্দ্রের বংশের পরাতন বন্ধগণ তাঁহাকে এরপে কাৰ্য্য করিয়া পিতার নাম ডুবাইতে নিষেধ করিলেন । কিন্তু ছেলেটী কিছ: গোঁয়ার, তিনি বিন্দর মাতার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন, (আমাদের লিখিতে লজা করে) বিন্দর শতক লান মুখখানিও দুই একবার গোপনে দেখিলেন, এবং তৎপরে বিন্দরে মাতাকে ও জ্যেঠাইমাকে সম্মত করাইয়া বিবাহের সমস্ত আয়োজন ঠিক করিলেন। বিন্দরে জ্যেঠাইমা মন্দ লোক ছিলেন না, তাঁহার মনটী সরল, কলহ বা তিরস্কার করা তাঁহার বড় অভ্যাস ছিল না, তিনি কাহারও অনিন্ট করিতে চাহিতেন না। তবে বস্তু মানুষের মেয়ে, স্বামী অনেক রোজগার করেন, তাহাতে যদি একটা বড়মানুষী রকম দপ থাকে, একটা বড় কুটম ○○8