পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৫০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১২২
অমরমাণিক্য ও মঘরাজ

করিয়া দিল, ত্রিপুর সৈন্যের অন্নকষ্ট উপস্থিত হইল। খাদ্যাভাবে তাহারা পার্ব্বত্য জুমের খোঙ্গা আলু চিবাইতে লাগিল, অদ্যাপি সেই স্থানের পর্ব্বতকে খোঙ্গি শৈল কহে। মঘেরা তাহাদিগকে তাড়া করিয়া নদীতীরে আনিল, অনশনে উদ্বেগে তাড়া খাইয়া অনেকেরই প্রাণ বিয়োগ হইল, যাহারা প্রাণে বাঁচিল তাহারা নদী সাঁতরাইয়া এপারে আসিল।

 রাজধর বুঝিলেন মস্ত ভুল হইয়া গেল। কর্ণফুলি নদীর তীরে মাথায় হাত দিয়া নিজের শিবিরে বসিয়া পড়িলেন, দেখিতে দেখিতে সন্ধ্যার অন্ধকার ছাইয়া গেল। অনেক চিন্তার পর রাজধর স্থির করিলেন, রাত্রি থাকিতে থাকিতে গিরিবর্ত্ম-গুলিতে ঝোপের ফাঁকে ফাঁকে সৈন্য রাখিতে হইবে, যেন মঘেরা বিন্দুমাত্র টের না পায়। নিজের গড়খাই হইতে কিছুদূরে সৈন্য সজ্জা রাখা হইবে যেন মঘেরা মনে করে ত্রিপুর সৈন্য ইহার বেশী অগ্রসর হয় নাই; নিঃসঙ্কোচে যখন ইহারা পর্ব্বত হইতে নামিতে থাকিবে তখন সঙ্কেত পাইয়া ত্রিপুর সৈন্যেরা ইহাদের উপর লাফাইয়া পড়িবে। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। সারারাত্রি ধরিয়া যুদ্ধের ফাঁদ পাতা হইল, মঘেরা বিজয়োল্লাসে পান ভোজনে মত্ত থাকিয়া কিছুই জানিতে পারিল না।

 পরদিন অতি প্রত্যূষে লড়াই বাঁধিয়া গেল। মঘেরা পাহাড় হইতে নামিতে গিয়া একেবারে টুকরা হইয়া গেল। দূরে ত্রিপুরসৈন্য ইহা দেখিয়া তাহাদিগকে তাড়া করিয়া আসিল,