পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৬১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৩৩
রাজধরমাণিক্য

সামান্য বসন-ভূষণ-ভবনে রাজা হইয়া দিন কাটাইতে লাগিলেন। উদয়পুরের স্মৃতি কখনও ভুলিতে পারিতেন না। কি উপায়ে পতৃিপিতামহের গৌরব-সমুজ্জ্বল উদয়পুরের উদ্ধার সাধন করিতে পারেন সেই চিন্তায় দিবারাত্র বিভোর থাকিতেন।

 কিছুকাল পরে ভাগ্যলক্ষ্মী তাঁহার প্রতি সুপ্রসন্না হইলেন। মঘরাজ্যে গোলযোগ হওয়ায় মঘ সৈন্য উদয়পুর হইতে উঠিয়া গেল। এই সুযোগে রাজধর পাত্র মিত্র সভাসদ্ লইয়া উদয়পুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করিলেন। তখন ভাদ্রের প্রথমভাগ, কৃষ্ণপক্ষ, পর্ব্বতে পর্ব্বতে জুম ধান পাকিয়া সুঘ্রাণ ছড়াইতেছে, মাথার উপরে রাজচ্ছত্র মৃত্যুমন্দ পবনে হেলিতেছে, রাজধর চাহিয়া দেখিলেন হাস্যময়ী প্রকৃতি যেন তাঁহাকে সাদরে নিরীক্ষণ করিতেছেন। খুটিশৈল বামে রাখিয়া ধ্বজনগরপথে রাজধর বর্ত্তমান আগরতলার পার্শ্ব ঘেষিয়া বিশালগড়ে পৌঁছিলেন, সেখান হইতে অভিনিস্ক্রমণ স্থান ডোমঘাট পৌঁছিতেই চারিদিকে সাড়া পড়িয়া গেল। মহাসমারোহে রাজধর পুরপ্রবেশ করিলেন, সে সময়ে সেলামবাড়ি নামে জাতীয় বাদ্য বাজিতেছিল।

 রাজধর সিংহাসনে বসিয়া কেবলি দেবসেবায় মন দিলেন। পিতার ভাগ্যবিপর্য্যয়ে তাঁহার বোধ হইয়াছিল একমাত্র বিষ্ণু সেবাই সার আর সকলই অসার। নিত্য প্রাতঃস্নান করিয়া সন্ধ্যাপূজায় নিমগ্ন থাকিতেন, রাজপুরোহিতদ্বয় সার্ব্বভৌম ও বিরিঞ্চিনারায়ণ মহারাজকে দিয়া প্রত্যহ পঞ্চপাত্রে অন্নদান