পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২০১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৭৩
দ্বিতীয় রত্নমাণিক্য

কেশরীদাসকে কুমিল্লা প্রেরণ করেন। বলিভীম আত্মরক্ষায় অসমর্থ হইয়া ধৃত হইলেন, প্রথমে তাঁহাকে ঢাকা নেওয়া হয় তৎপর মুর্শিদাবাদ নবাবের নিকট পাঠান হয়। এইরূপে বলিভীমের দুর্বৃত্তপণার অবসান ঘটে।

 শায়েস্তা খাঁ বলিভীমের স্থানে কাহাকে বসাইবেন এই লইয়া চক্রান্ত চলিতে লাগিল। রামমাণিক্যের সময়ে দ্বারকা একবার সিংহাসনে বসিবার প্রয়াস পাইয়াছিলেন এইবার তিনি উঠিয়া পড়িয়া লাগিলেন। শায়েস্তা খাঁর সহিত যোগাযোগ স্থাপন করিয়া ফৌজসহ দ্বারকা ঢাকা হইতে উদয়পুর আক্রমণে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। রত্নমাণিক্য অপ্রাপ্ত বয়স্ক, দেশদ্রোহীর এরূপ সমরায়োজনে ভয় পাইয়া তিনি পরিজনসহ উদয়পুর ছাড়িয়া বনে প্রবেশ করিলেন। রামমাণিক্যের অনুজ জগন্নাথ-তনয় সূর্য্যনারায়ণ ছিলেন উজীর, অন্য তনয় চম্পক রায় ছিলেন দেওয়ান।[১] দ্বারকার আক্রমণে উজীরের মৃত্যু হয়; তখন বেগতিক দেখিয়া চম্পকরায় পলায়ন করেন। দ্বারকার দীর্ঘকালের সঞ্চিত উচ্চাভিলাষ পূর্ণ হইল, উদয়পুর সগৌরবে প্রবেশ করিয়া তিনি নিজকে নরেন্দ্রমাণিক্য নামে প্রচার ক্রমে সিংহাসন আরোহণ করেন। নরেন্দ্রমাণিক্য আপন অভিপ্রায় গোপনে রাখিয়া বনবাসী রত্নমাণিক্যের নিকট উদয়পুরে

  1. চম্পকবিজয় নামক একখানি হস্তলিখিত পুঁথিতে তৎকালীন ঘটনার সবিস্তার আভাষ দেওয়া হইয়াছে, পুস্তকখানি পদ্যে লিখিত কিন্তু রাজমালার ন্যায় ইহার ভাব সুপরিস্ফুট নহে।