পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৬০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৩২
ঈশানচন্দ্রমাণিক্য

কর ধার্য্য করিলেন, তাহার বন্দোবস্তী পাট্টাতে মহারাজের মোহর অঙ্কিত করিবার জন্য গুরু সেই পাট্টা লইয়া রাজসমক্ষে উপস্থিত হইলে মহারাজ পুনর্ব্বার গুরুকে বলিলেন, “প্রভো! এই কার্য্য হইতে বিরত হউন!”

 “গুরুভক্তি পরায়ণ নৃপতি গুরুর আজ্ঞা পালন করিবার জন্য “শ্রীগুরু আজ্ঞা” মোহর তাহাতে অঙ্কিত করিলেন। কিন্তু ধর্ম্মভয়ে ধর্ম্মভীরু নৃপতির হৃদয় ও হস্ত কম্পিত হইল। ইহার কয়েক মুহুর্ত্ত পরে মহারাজ একখণ্ড চিঠি লিখিতে ইচ্ছা করিয়া লেখনী ধারণ করিলেন কিন্তু লেখনী সঞ্চালন করিতে পারিলেন না, তাঁহার দক্ষিণ হস্ত কম্পিত হইতে লাগিল। এইরূপে ৩৩ বৎসর বয়ঃক্রমে (১২৭১ ত্রিপুরাব্দে) মহারাজ ঈশানচন্দ্রমাণিক্য জীবনান্তকর বাতব্যাধি রোগে আক্রান্ত হইলেন।”

 “মহারাজ ঈশানচন্দ্র রোগাক্রান্ত হওয়ার পূর্ব্বে সপরিবারে বাস করিবার জন্য একটি নূতন অট্টালিকা নির্ম্মাণ আরম্ভ করেন। সেই অট্টালিকা প্রস্তুত হইলে ১২৭২ ত্রিপুরাব্দের ১৬ই শ্রাবণ মহারাজ নূতন গৃহে প্রবেশের দিন অবধারণ করিলেন। নির্দ্দিষ্ট ১৬ই শ্রাবণ পুত্র কলত্র সমভিব্যাহারে মহারাজ ঈশানচন্দ্র নূতন নিকেতনে প্রবেশ করিলেন। তৎপর দিবস (প্রায় ১০ ঘটিকার সময়) অসাধারণ গুরুভক্তি-পরায়ণ প্রজারঞ্জক মহারাজ ঈশানচন্দ্রমাণিক্য ৩৪ বৎসর বয়ঃক্রমে পরলোক গমন করেন।”[১]


  1. কৈলাসসিংহ প্রণীত রাজমালা—পৃঃ ১৭৪-৭৬।