পাতা:রাজসিংহ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অষ্টম পরিচ্ছেদ।
৩১

 মাণিকলাল তখন রাণার পদধূলি গ্রহণ করিল। এবং রাণাকে ক্ষণকাল অবস্থিতি করাইয়া গুহামধ্যে প্রবেশ করিয়া তথা হইতে অপহৃত মুক্তাবলয়, পত্র দুইখানি, এবং আশরফি চারিখণ্ড আনিয়া দিল। বলিল, “ব্রাহ্মণের যাহা আমরা কাড়িয়া লইয়াছিলাম, তাহা শ্রীচরণে অর্পণ করিতেছি। পত্র দুইখানি আপনারই জন্য। দাস যে উহা পাঠ করিয়াছে, সে অপরাধ মার্জ্জনা করিবেন।”

 রাণা পত্র হস্তে লইয়া দেখিলেন, তাঁহারই নামাঙ্কিত শিরোনামা। বলিলেন,

 মাণিকলাল—পত্র পড়িবার এ স্থান নহে। আমার সঙ্গে আইস—তোমরা পথ জান, পথ দেখাও।”

 মাণিকলাল পথ দেখাইয়া চলিল। রাণা দেখিলেন যে দস্যু একবার তাহার ক্ষত ও আহত হস্তের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতেছে না, বা তৎসম্বন্ধে একটা কথাও বলিতেছে না— বা একবার মুখ বিকৃত করিতেছে না। রাণা শীঘ্রই বন হইতে বেগবতী ক্ষীণাতটিনীতীরে এক সুরম্য নিভৃত স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন।


অষ্টম পরিচ্ছেদ।

 তথায়, উপলঘাতিনী কলনাদিনী, তটিনীর সঙ্গে সুমন্দমধুর বায়ু, এবং স্বরলহরী বিকীর্ণকারী কুঞ্জবিহঙ্গমগণ ধ্বনি