রাণা বলিলেন, “দেখ, দোলা খালি কি না?”
সৈনিক বলিল, “দোলা খালি। কুমারী জী মহারাজের সাম্নে।”
চঞ্চলকুমারী তখন রাজসিংহকে প্রণাম করিলেন। রাণা জিজ্ঞাসা করিলেন,
“রাজকুমারি—আপনি এখানে কেন?”
চঞ্চল বলিলেন, “মহারাজ! আপনাকে প্রণাম করিতে আসিয়াছি। প্রণাম করিয়াছি—এখন একটি ভিক্ষা চাহি। আমি মুখরা—স্ত্রীলোকের শোভা যে লজ্জা তাহা আমাতে নাই, ক্ষমা করিবেন। ভিক্ষা যাহা চাহি—তাহাতে নৈরাশ করিবেন না।”
চঞ্চলকুমারী হাস্য ত্যাগ করিয়া, যোড়হাত করিয়া কাতর স্বরে এই কথা বলিলেন। রাজসিংহ বলিলেন,
“তোমারই জন্য এতদূর আসিয়াছি—তোমাকে অদেয় কিছুই নাই—কি চাও, রূপনগরের কনো?”
চঞ্চলকুমারী আবার যোড়হাত করিয়া বলিল, “আমি চঞ্চলমতি বালিকা বলিয়া আপনাকে আসিতে লিখিয়াছিলাম; কিন্তু আমি নিজের মন আপনি বুঝিতে পারি নাই। আমি এখন মোগলসম্রাটের ঐশ্বর্য্যের কথা শুনিয়া বড় মুগ্ধ হইয়াছি। আপনি অনুমতি করুন—আমি দিল্লী যাইব।”
রাজসিংহ বিস্মিত ও বিরক্ত হইলেন। বলিলেন, “তোমার দিল্লী যাইতে হয় যাও—আমার, আপত্তি নাই—স্ত্রীলোক চিরকাল অস্থিরচিত্ত। কিন্ত আপাততঃ তুমি যাইতে পাইবে না। যদি এখন তোমাকে ছাড়িয়া দিই, মোগল মনে করিবে