পরিবারস্থ স্ত্রীলোকদিগকে পড়িয়া শুনাইতেন, তাঁহারা বুঝিতে পারেন কি না। শুনিতে পাওয়া যায় একদিন রাত্রি প্রভাত হইবার পূর্ব্বেই প্যারীচাঁদ মিত্রের গৃহের দ্বারে গিয়া ডাকাডাকি,—প্যারি, প্যারি! উঠ উঠ, এবারকার পঞ্জিকা পড়িয়া তোমার স্ত্রী কি বলিলেন?”
তিনি অতিশয় সহৃদয় ও স্বগণ-বৎসল লোক ছিলেন। নিজে দারপরিগ্রহ করেন নাই; ঘরে শিশু-সন্তানের মুখ দেখার সুখ হয় নাই; কিন্তু শিশুদিগকে বড় ভালবাসিতেন; আত্মীয় স্বজনের বালক বালিকাদিগকে লইয়া নিজের নিকট রাখিতেন; তাহাদের সহিত গল্প করিতে ও খেলা করিতে ভাল বাসিতেন।
জীবনের শেষদশাতে তিনি চন্দননগর গোদলপাড়াতে গঙ্গার ধারে একটা বাগানবাটী ক্রয় করিয়া সেখানে অৰস্থিত হইয়াছিলেন। সেখানে ১৮৭০ সালের ১৭ই মে দিবসে তাঁহার দেহান্ত হয়।
১৮৩৩ সালে লাহিড়ী মহাশয় হিন্দুকালেজ হইতে উত্তীর্ণ হইয়াই ঐ কালেজে এক নিম্নতন শিক্ষকের কর্ম্ম পাইলেন। সে পদের বেতন ৩০৲ টাকার অধিক ছিল না। সেই বেতনেই তিনি নিজের ও ভ্রাতৃদ্বয়ের ভরণ পোষণ করিতে লাগিলেন। কেবল তাহা নহে, এই কর্ম্ম লইয়া বসিবা মাত্র তাঁহার বাসা নিরাশ্রয় ও আশ্রয়ার্থী ব্যক্তিগণের আশ্রয় স্থান হইয়া উঠিল। লাহিড়ী মহাশয় তাঁহার স্বভাব-সুলভ উদারতা ও অমায়িকতা গুণে কাহাকেও “না” বলিতে পারিতেন না। এইরূপে সর্ব্বদাই দুই একজন লোক আসিয়া তাঁহার ভবনে আশ্রয় লইয়া থাকিত। এই সময়ের আশ্রয়ার্থীদিগের মধ্যে একজনের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা বাইতে পারে। তিনি উত্তয়কালে দেশের মধ্যে একজন মান্য গণ্য লোক হইয়াছিলেন। ইহার নাম শ্যামাচরণ শর্ম্ম-সরকার। ইনি হাইকোর্টের ইণ্টারপ্রিটার ও ব্যবস্থাদর্পণ-প্রণেতারূপে যশস্বী হইয়াছিলেন। প্রথম শর্ম্ম-সরকার মহাশয় খিদিরপুর ওৱাটগঞ্জে তাঁহার পিতার বন্ধু চার্লস