পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
লেফটেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

যাইতেন না। অদ্যও তাহার সঙ্গে তাহায় চির সহচর রুলগাছটী ছিল।

 সন্ধ্যা হইয়া গিয়াছে। আকাশে তারকারাজি একে একে ফুটিয়া উঠিয়াছে, চন্দ্র না উঠিলেও রাস্তা একেবারে অন্ধকার হয় নাই, মধ্যে মধ্যে কোন কোন দোকান হইতে ভালো পড়িয়া রাস্তা আলোকিত করিয়াছে। সন্ধ্যার পর রেঙ্গুনের রাস্তায় বড় লোক চলাচল করে না; সুরেশ দুই দশ জন দরিদ্র মগকে গৃহে ফিরিতে দেখিতে পাইলেন। বাঙ্গালা দেশের শ্রমজীবিগন যেরূপ সমস্ত দিনের পর গৃহে ফিরিবার সময় গলা ছাড়িয়া গান করে, মগেরা তাহা করে না। সুরেশ যাহাদিগকে দেখিলেন, তারা নীরবে গৃহাভিমুখে চলিয়াছে। তিনিও নীরবে বাসার দিকে যাইতে ছিলেন, নানা চিন্তায় তাঁহার মন ব্যাকুলিত। একবার ঘোর হতাশ আসিয়া তাহাকে গ্রাস করিতেছে, আবার পর মূহুর্তেই আশায় মন প্রাণ পূর্ণ হইয়া যাইতেছে। যাহা হইয়া গিয়াছে, যাহা হইবে, এই সকল ভাবিতে ভাবিতে সুরেশ বাসার দিকে আসিতেছিলেন।

 সহসা একটা শব্দে তিনি চমকিত হইয়া উঠিলেন। তাহার বোধ হইল যেন কি তাহার পাশ দিয়া চলিয়া গেল। সেটা নিকটস্থ প্রাচীরে গিয়া লাগায় সুরেশ শব্দে বুঝিলেন, সেখানি দা, দূর হইতে কে ছুটিয়াছে। তিনি দাড়াইলেন, গলিটী ভাল করিয়া দেখিলেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ আর একখানি দা তাহার পার্শ্ব দিয়া চলিয়া গেল। কেবল অদৃষ্টবলে এই শানিত দা দুখানা তাঁহার গায়ে লাগিল না; লাগিলে তিনি হত না হইলেও যেগুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হইতেন সে বিষয়ে সন্দেহ নাই।