পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/১৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বৃন্দাবন জিদ করিয়া কহিল, যে কারণে ইতস্ততঃ করছ মা, তা ছ'দিন পরেও হবে না । যে তোমাকে অপমান করেছে, ইচ্ছে হয়, তাকে তুমি ক্ষমা করে, কিন্তু আমি করবে না। আর পারিনে মা, আমাকে অনুমতি দাও, আমি একটু স্বস্থ হয়ে বাচি । মা মুখ তুলিয়া আবার চাহিলেন। ক্ষণকাল ভাবিয়া একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, আচ্ছ, অনুমতি দিলুম। এ নিশ্বাসের মৰ্ম্ম বৃন্দাবন বুঝিল, কিন্তু সেও আর কথা কহিল না। নিঃশব্দে পায়ে মাথা ঠেকাইয়া, পায়ের ধূলা মাথায় লইয়া ঘরের বাহিরে জাসিয়া দাড়াইল । পণ্ডিত মশাই, আপনার চিঠি, বলিয়া এক ছাত্র আসিয়া একখানা পত্র হাতে দিল । মা ভিতর হইতে জিজ্ঞাসা করিলেন, কার চিঠি বৃন্দাবন ? জানিনে মা, দেখি, বলিয়া বৃন্দাবন অন্যমনস্কের মত নিজের ঘরে চলিয়া গেল। খুলিয়া দেখিল, মেয়েলি অক্ষরে পরিষ্কার স্পষ্ট লেখা। কাটাকুটি নাই, বর্ণাশুদ্ধি নাই, উপরে শ্ৰীচরণকমলেষু পাঠ লেখা আছে, কিন্তু নীচে দস্তখত নাই। কুস্কমের হস্তাক্ষর সে পূৰ্ব্বে না দেখিলেও, তৎক্ষণাৎ বুঝিল ইহা তাহারই পত্র। সে লিথিয়াছে—দাদাকে দেখিলে এখন তুমি আর চিনিতে পারিবে না। কেন, তাহা অপরকে কিছুতেই বলা যায় না, এমনকি, তোমাকে বলিতেও আমার লজ্জায় মাথা হেঁট হইতেছে । তিনি আবার আজিও শ্বশুরবাড়ি গেলেন । হয়ত, কাল ফিরিবেন। নাও ফিরিতে পারেন, কারণ বলিয়া গিয়াছেন, এখানে বাঘ-ভালুক নাই, একণ পাইয়া আমাকে কেহ খাইয়া ফেলিবে, এ আশঙ্কা তাহার নাই। তোমার আত সাহস যদি না থাকে, আমার চরণকে দিয়া যাও । সকালে দাদার উপর অভিমান করিয়া কুষম উনানে জল ঢালিয়া দিয়াছিল, আর তাহা জলে নাই। সারাদিন অভুক্ত। ভয়ে ভাবনায় সহস্রবার ঘর-বার করিয়া যখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া গেল, কেহ আসিবে এ ভরসা আর যখন রহিল না এবং এই নির্জন নিস্তব্ধ বাটতে সমস্ত রাত্রি নিজেকে নিছক একাকী কল্পনা করিয়া যখন বারংবার তাহার গায়ে কাটা দিতে লাগিল, এমনি সময়ে বাহিরে চরণের স্বতীয়কণ্ঠের মাতৃ-সম্বোধন শুনিয়া তাহার জল-মল্প মন অতল জলে যেন অকস্মাৎ মাটিতে পা ब्रिा मैंiफ़ाईल । - ণে ছুটির আলিরা চরণকে কোলে তুলিয়া লইল এবং তার মুখ নিজের »ዓበ