পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংএই নিঃশব্দে আসিয়া আসন পাতিয়া খাবার রাখিয়া গিয়াছে। যদিও ঘরে আর কেহ ছিল না, তথাপি সে নিশ্চয় বুঝিল সে একা নহে। আসনে বসিয়া সে আস্তে আস্তে বলিল, এখন এত বেশি খেলে অীয় ত খেতে পারব না । বাহির হইতে জবাব আসিল, খেতেও হবে না, বিপিনবাবুর ওখান থেকে নিমন্ত্রণ করে গেছে । সতীশ হাসিয়া ফেলিল। বলিল, যাও—জালাতন ক’রো না, আমি কোথাও যেতে পারব না । সাবিত্রী আড়াল হইতে বলিল, সে কি হয় ! বলে গেছেন কোথায় যেতে হবে আপনি জানেন এবং না গেলে তাদের সমস্ত পণ্ড হয়ে যাবে ! গান-বাজনা— হয় হোক, বলিয়া সতীশ-এ প্রসঙ্গ বন্ধ করিয়া দিয়া নিঃশব্দে আহার করিতে লাগিল এবং শেষ হইয়া গেলে বিছানার শিয়রে আলো তুলিয়া আনিয়া ভাল-ছেলের মত একখানা ডাক্তারি বই খুলিয়া চিৎ হইয়া শুইয়া পড়িল । কিন্তু সেদিকে কোনমতেই মন দিতে পারিল না। তাহার দুশ্চিন্তামুক্ত মন বন্ধন-মুক্ত ঘোড়ার মতই বিনা প্রয়োজনে সৰ্ব্বত্র ছুটিয়া বেড়াইতে লাগিল । রান্নাঘরে তখন রান্না চাপাইয়া দিয়া বামুনঠাকুর বেহারীকে দিয়া গাজা ডলাইতেছিল এবং রাখালবাবুর ঘরে পাশার কোলাহল উত্তরোত্তর দুরন্ত হইয়া উঠতেছিল । সতীশ ডাকিল, সাবিত্ৰী ! সাবিত্রী তখনও চৌকাঠের বাহিরে বসিয়াছিল, বলিল, আজ্ঞে । সতীশ কছিল, বিপিনবাবুর নিমন্ত্রণে যাওয়া মহাপাপ । না বুঝে করেচি বটে, কিন্তু বুঝে করব না । সাবিত্রী বাহির হইতে প্রশ্ন করিল, পাপ কেন ? সতীশ কহিল, আমি জানি কোন জায়গায় তার গান-বাজনার আয়োজন চলচে। শুধু সেই স্থানটায় যাওয়াই একটা পাপের কাজ । বেশ ত, তেমন স্থানে নাই গেলেন । সতীশ উত্তেজিত হইয়া বলিল, নিশ্চয়ই যাব না । কিন্তু তারা যে সহজে আমাকে নিকুতি দেবে এমন মনে হয় না। তাই তোমাকে আগে থেকেই সাবধান করে দিচ্ছি—যদি কেউ আসে—ফিরিয়ে দিয়ে । বোলে, আমি বাড়ি নেই—রাত্রে আসব না, বুঝেচ ? সাবিত্ৰী বলিল, বুঝেচি । সতীশ একটা কৰ্ত্তব্য পালন করিয়া স্বস্থভাবে নিশ্বাস ফেলিয়া ক্ষণকাল নীরব 总编