পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/২৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ভাক্তার কহিলেন, দূর থেকে এসে যারা জন্মভূমি আমার অধিকার করেচে, আমার মনুষ্যত্ব, আমার মধ্যাদা, আমার ক্ষুধার অল্প, তৃষ্ণার জল,—সমস্ত যে কেড়ে নিলে, তারই রইল আমাকে হত্যা করবার অধিকার, আর রইল না আমার ? এ ধৰ্ম্মবুদ্ধি তুমি কোথায় পেলে ভারতী ? ছি ! 银 কিন্তু আজ ভারতী অভিভূত হইল না, সে প্রবলবেগে মাথা নাড়িতে নাড়িতে কহিল, ন দাদা, আজকে আমাকে কিছুতেই লজ্জা দিতে পারবে না। এসব পুরানো কথা,-হিংসার পথে যারাই প্রবৃত্তি দেয়, তারাই এমনি করে বলে ! এই শেষ কথা নয়, জগতে এর চেয়েও বড়, ঢের কথা আছে । ডাক্তার কহিলেন, কি আছে বল গুনি ? ভারতী উচ্ছ্বসিতশ্বরে বণিয়া উঠিল, আমি জানিনে, কিন্তু তুমি জানো । ষে বিদ্বেষ তোমার সত্যবৃদ্ধিকে এমন একান্তভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেচে, একবার তাকে ত্যাগ করে শাস্তির পথে ফিরে এসো, তোমার জ্ঞান, তোমার প্রতিভার কাছে পরাস্ত মানবে না এমন সমস্ত পৃথিবীতে নেই। জোরের বিরুদ্ধে জোর, হিংসার বদলে হিংসা, অত্যাচারের পরিবর্তে অত্যাচার এ তে বর্বরতার দিন থেকেই চলে আসচে। এর চেয়ে মহৎ কিছু কি বলা যায় না ? কে বলবে ? ভারতী অকুষ্ঠিতস্বরে কহিল, তুমি। ঐট আমাকে মাপ করতে হবে ভাই। সাহেবদের বুটের তলায় চিৎ হয়ে গুয়ে শাস্তির বাণী আমার মুখ দিয়ে ঠিক বার হবে না, –হয়ত আটকাবে। বরঞ্চ ও-ভার শশীকে দাও, তোমার খাতিরে ও পারবে ! এই বলিয়া ডাক্তার হাসিলেন । ভারতী ক্ষুন্ন হইয়া কহিল, তুমি ঠাট্টা করলে বটে কিন্তু যাদের পরে তোমার এত বিদ্বেষ, সেই ইংরেজ মিশনারীদেরই অনেকের কাছে বলে দেখেচি তারা সত্যই আনন্দ जांडछ कब्रन । ডাক্তার স্বীকার করিয়া কহিলেম, অত্যন্ত স্বাভাবিক ভারতী । সুন্দরবনের মধ্যে নিরস্ত্র দাড়িয়ে শাস্তির বাণী প্রচার করলে বাঘ ভালুকের খুশী হবারই কথা। র্তার সাধু ব্যক্তি । ভারতী এই বিদ্ধপে কান দিল না, কহিতে লাগিল, আজ ভারতের যত দুর্ভাগ্যই আম্বক, চিরদিন এমন ছিল না। একদিন ভারতবাসী সভ্যতার উচ্চশিখরে আরোহণ করেছিল। সে দিন হিংসা বিদ্বেষ নয়, ধৰ্ম্ম এবং শাস্তিমন্ত্রই এই ভারতবর্ষ থেকে দিকে দিকে প্রচারিত হয়েছিল। আমার বিশ্বাস সেদিন আবার আমাদের ফিরে আসবে। ३*क