পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* শরৎসাহিত্য-সংগ্ৰহ নারী-জীবনের সবচেয়ে বড় মিথ্যে ? এই সুবিচারের আশাতেই আমরা আপনাদের মুখ চেয়ে থাকি ? অজিত উত্তর দিল, কিন্তু উপায় কী ? যা এমন ক্ষণস্থায়ী, এমন ভঙ্গুর, তাকে এর বেশি সম্মান মানুষ দেবে কেন ? Ö কমল বলিল, দেবে না জানি । আমার উঠানের ধারে যে ফুল ফোটে তার জীবন একবেলার বেশি নয়। তার চেয়ে ওই মশলা-পেশা নোড়াটা ঢের টিকসই, ঢের দীর্ঘস্থায়ী। সত্য যাচাই করার এর চেয়ে মজবুত মানদণ্ড আপনার পাবেন কোথায় ? কমল, এ যুক্তি নয়, এ শুধু তোমার রাগের কথা । রাগ কিসের অজিতবাবু? কেবল স্থায়িত্ব নিয়েই যাদের কারবার তারা এমনি করেই মূল্য ধাৰ্য্য করে। আমার আহবানে যে আপনি সাড়া দিতে পারেননি তার মূলেও এই সংশয়। চিরদিনের দাসখৎ লিখে যে বন্ধন নেবে না তাকে বিশ্বাস করবেন আপনি কি দিয়ে ? ফুল যে বোঝে না তার কাছে ঐ পাথরের নোড়াটাই ঢের বেশি সত্য। শুকিয়ে ঝরে যাবার শঙ্কা নেই, আয়ু একটা বেলার নয় ও নিত্যকালের । রান্নাঘরের প্রয়োজনে ও চিরদিন রগড়ে মশলা পিশে দেবে—ভাত গেলবার তরকারির উপকরণ–ওর প্রতি নির্ভর করা চলে ! ও না থাকলে সংসার বিস্বাদ হয়ে ওঠে । অজিত তাহার মুখের দিকে চাহিয়া কহিল, এ বিদ্রুপ কিসের কমল ? * কমলের কানে বোধ করি এ প্রশ্ন গেল না, সে যেন নিজের মনেই বলিতে লাগিল, মামুষে বোঝে না যে হৃদয়-বস্তুটা লোহার তৈরি নয়। অমন নিশ্চিন্ত নিৰ্ভয়ে তাতে ভর দেওয়া চলে না। - দুঃখ যে নেই তা নয়, কিন্তু এই তার ধৰ্ম্ম, এই তার সত্য । অথচ এ-কথা বলাও চলে না, স্বীকার করাও যায় না । এর চেয়ে বড় দুর্নীতি সংসারে আর আছে কি ? তাই ত কেউ ভেবেই পেলে না শিবনাথকে কি করে আমি নিঃশেষে ক্ষমা করতে পারি। কেঁদে কেঁদে যৌবনের যোগিনী হওয়াটা তার বুঝতেন, কিন্তু এ তাদের সইল না। অরুচি ও অবহেলায় সমস্ত মন তাদের তিতে হয়ে গেল। গাছের পাতা শুকিয়ে ঝরে যায়, তার ক্ষত নূতন পাতায় পূর্ণ করে তোলে। এই হ’লে মিথ্যে, আর বাইরের শুকনো লতা মরে গিয়েও গাছের সর্বাঙ্গ জড়িয়ে কামড়ে এটে থাকে, সেই হ’লে সত্য ? অজিত একমনে শুনিতেছিল; শেষ হইলে সহসা একটা দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া কছিল, একটা কথা আমরা প্রায় ভুলে যাই যে, আসলে তুমি আমাদের আপনার নয় । তোমার রক্ত, তোমার সংস্কার, তোমার সমস্ত শিক্ষণ বিদেশের । তার প্রচও সংঘাত షిసె\ు