পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎসাহিত্য সংগ্ৰহ বিকালের দিকে একথান টাঙ্গা গাড়ী গেটের মধ্যে ঢুকিতে দেখিয়া আস্তবাবু খবর লইয়া জানিলেন। গাড়ী আসিয়াছে অজিতের জন্ত । অজিতকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। সে আসিতে তিনি কষ্ট্রে একটুখানি হাসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, টাঙ্গ কি হবে অজিত ? so একবার বেড়াতে বার হবো । কেন, মোটর কি হ’লে ? আবার বিগড়েচে নাকি ? না । কিন্তু আপনাদের প্রয়োজন হতে পারে ত । যদি হয়ও তার জন্তে একটা ঘোড়ার গাড়ী আছে। এই বলিয়া তিনি একমুহূৰ্ত্ত মেন থাকিয়া কহিলেন, বাবা অজিত, আমাকে সত্যি বল । মোটর নিয়ে কোন কথা উঠেচে ? অজিত কহিল, কই আমি ত জানিনে ! তবে আজ আপনাদের গান-বাজনার আয়োজন আছে। তাদের আনতে, বাড়ি পৌছে দিতে মোটরের আবশ্যকই বেশি। ঘোড়ার গাড়ীতে ঠিক হয়ে উঠবে না। সকাল হইতে নানারূপ দুশ্চিন্তায় কথাটা আস্তবাবু ভুলিয়াই ছিলেন। এখন মনে পড়িল কাল সভাভঙ্গের পর আজিকার জন্যও তাঁহাদের আহবান করা হইয়াছিল এবং সন্ধ্যার পর মজলিশ বসিবে। একটা খাওয়ানোর কল্পনাও যে মনোরমার ছিল এই সঙ্গে এ-কথাও তাহার স্মরণ হইল। কিন্তু মনে মনে একটু ‘হাসিলেন। কারণ প্রচ্ছন্ন কলহের মানসিক অস্বচ্ছন্দতায় কথাটা তাহার নিজেরই মনে নাই এবং মনে পড়িয়াও ভাল লাগিল না, তখন মেয়ের কাছে যে আজ এ-সকল কতদূর বিরক্তিকর তাহা স্বতঃসিদ্ধের মত অনুমান করিয়া কহিলেন, আজ ও-সব হবে না অজিত । অজিত কহিল, কেন ? কেন ? মণিকেই একবার জিজ্ঞাসা করে দেখ না। এই বলিয়া তিনি বেহারাকে উচ্চৈস্বরে ডাকাডাকি করিয়া কন্যাকে ডাকিতে পাঠাইয়া ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন, , তুমি রাগ করে আছ বাবা, গান-বাজনা শুনবে কে ? মণি ? আচ্ছা সে-সব আর একদিন হবে, এখন যাও তুমি মোটর নিয়ে একটু ঘুরে এসে গে। কিন্তু বেশি .দেরি করতে পাবে না। আর তোমার একলা যাওয়া চলবে না তা বলে দিচ্চি । ড্রাইভার-ব্যাটা যে কুড়ে হয়ে গেল ! এই বলিয়া তিনি একটা সুকঠিন সমস্তার অভাবনীয় মুমীমাংসা করিয়া উজ্জল আনন্দে'আরাম-কেদারায় চিৎ হইয়া পড়িয়া ফেস করিয়া পরিতৃপ্তির দীর্ঘশ্বাস মোচন করিলেন। সঙ্গে সঙ্গে বলিলেন, তুমি যাবে। টাঙ্গা ভাড়া করে বেড়াতে ! ছিঃ ! .S. \૭૭