পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমাজে মুক্তি H 8 (F চেয়ে ঢের বেশি চায়। মানুষ অধীন হতেই চায়। যার অধীন হলে অধীনতার অস্ত থাকে না তারই অধীন হবার জন্যে সে কাদছে। সে বলছে, ‘হে পরম প্রেম, তুমি যে আমার অধীন, আমি কবে তোমার অধীন হব ! অধীনতার সঙ্গে অধীনতার পূর্ণ মিলন হবে কবে। যেখানে আমি উদ্ধত, গর্বিত, স্বতন্ত্র, সেইখানেই আমি পীড়িত, আমি ব্যর্থ। হে নাথ, আমাকে অধীন করে নত করে বঁাচাও । যতদিন আমি এই মিথ্যেটাকে অত্যন্ত করে জেনেছিলুম ষে আমিই হচ্ছে আমি, তার অধিক আমি আর নেই, ততদিন আমি কী ঘোরাই ঘুরেছি! আমার ধন, আমার মনের বোঝা নিয়ে মরেছি। যখনই স্বপ্ন ভেঙে যায় বুঝতে পারি, তুমি পরম-আমি আছ— আমার আমি তারই জোরে আমি— তখনই এক মুহূর্তে মুক্তি লাভ করি। কিন্তু, শুধু তো মুক্তিলাভ নয়। তার পরে পরম অধীনতা। পরম-আমির কাছে সমস্ত আমিত্বর অভিমান জলাঞ্জলি দিয়ে একেবারে অনন্ত পরিপূর্ণ অধীনতার পরমানন্দ । ১ মাঘ মত আত্মা যে শরীরকে আশ্রয় করে সেই শরীর তাকে ত্যাগ করতে হয় । কারণ, আত্মা শরীরের চেয়ে বড়ো। কোনো বিশেষ এক শরীর যদি আত্মাকে বরাবর ধারণ করে থাকতে পারত, তা হলে আত্মা যে শরীরের মধ্যে থেকেও শরীরকে অতিক্রম করে তা আমরা জানতেই পারতুম না। এই কারণেই আমরা মৃত্যুর দ্বারা আত্মার মহত্ব অবগত হই। আত্মা এই হ্রাসবৃদ্ধিমরণশীল শরীরের মধ্যে নিজেকে ব্যক্ত করে । তার এই প্রকাশ বাধাপ্রাপ্ত প্রকাশ, সম্পূর্ণ প্রকাশ নয়। এইজন্তে শরীরকেই আত্মা বলে যে জানে সে সম্পূর্ণ সত্য জানে না। > e