পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রার্থনা 3)* থেকেই আমি যেন ‘যাই যাই’ বলে সাড়া দিই। ডাক দাও, ‘ওরে আয় আয়, ওরে ফিরে আয়, চলে অভ্যায়।’ এই অন্তরাত্মার অনন্ত আনন্দধামে আমার যা-কিছু সমস্তই এক জায়গায় এক হয়ে নিস্তব্ধ হয়ে চুপ করে বস্থক, খুব গভীরে, খুব গোপনে । হে প্রকাশ, তোমার প্রকাশের দ্বারা আমাকে একেবারে নিঃশেষ করে ফেলো ; আমার আর কিছুই বাকি রেখে না, কিছুই না, অহংকারের লেশমাত্র না। আমাকে একেবারেই তুমিময় করে তোলে। কেবলই তুমি, তুমি, তুমিময়। কেবলই তুমিময় জ্যোতি, কেবলই তুমিময় আনন্দ । হে রুদ্র, পাপ দগ্ধ হয়ে ভস্ম হয়ে যাক । তোমার প্রচণ্ড তাপ বিকীর্ণ করে। কোথাও কিছু লুকিয়ে না থাকুক, শিকড় থেকে বীজভরা ফল পর্যন্ত সমস্ত দগ্ধ হয়ে যাক । এ যে বহু দিনের বহু দুশ্চেষ্টার ফল, শাখার গ্রন্থিতে গ্রন্থিতে, পাতার আড়ালে আড়ালে ফ’লে রয়েছে। শিকড় হৃদয়ের রসাতল পর্যন্ত নেমে গিয়েছে । তোমার রুদ্র তাপের এমন ইন্ধন আর নেই। যখন দগ্ধ হবে তখনই এ সার্থক হতে থাকবে । তখন আলোকের মধ্যে তার অস্ত হবে। তার পরে হে প্রসন্ন, তোমার প্রসন্নতা আমার সমস্ত চিন্তায় বাক্যে কর্মে বিকীর্ণ হতে থাক। আমার সমস্ত শরীরের রোমে রোমে সেই তোমার পরমপুলকময় প্রসন্নতা প্রবেশ করে এই শরীরকে ভাগবতী তন্থ করে তুলুক। জগতে এই শরীর তোমার প্রসাদঅমৃতের পবিত্র পাত্র হয়ে বিরাজ করুক। তোমার সেই প্রসন্নতা আমার বুদ্ধিকে প্রশাস্ত করুক, হৃদয়কে পবিত্র করুক, শক্তিকে মঙ্গল করুক। তোমার প্রসন্নতা তোমার বিচ্ছেদসংকট থেকে আমাকে চিরদিন রক্ষা করুক । তোমার প্রসন্নতা আমার চিরন্তন অস্তরের ধন হয়ে আমার চিরজীবনপথের সম্বল হয়ে থাক। আমারই অন্তরাত্মার মধ্যে তোমার যে সত্য,