পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3Ra) শ্ৰীকান্ত টগর বোষ্টমীর মল্লযুদ্ধ তুমুল হইয়া উঠিল। দেখিতে দেখিতে সমস্ত লোক ভীড় করিয়া বিরিয়া ধরিল। হিন্দুস্থানীরা সমুদ্রপীড়া ভুলিয়া উচ্চকণ্ঠে বাহবা দিতে লাগিল। পাঞ্জাবীরা ছিা ছিা করিতে লাগিল, উৎকলবাসীরা চেচামেচি করিতে লাগিল-সবসুদ্ধ একটা কাণ্ড বাধিয়া গেল। আমি স্তম্ভিত বিবর্ণমুখে দাড়াইয়া রহিলাম। এত সামান্য কারণে এত বড় অনাবৃত নির্লজ্জতা যে সংসারে ঘাঁটিতে পারে, ইহা ত আমি কল্পনা করিতেও পারিতাম না । তাহাই আবার বাঙালী নরনারীর দ্বারা এক জাহাজ লোকের সম্মুখে অনুষ্ঠিত হইতে দেখিয়া, লজ্জায় মাটির সহিত মিশিয়া যাইতে লাগিলাম। কাছেই একজন জৌনপুরী দরওয়ান অত্যন্ত পরিতৃপ্তির সহিত তামাশা দেখিতেছিল ; আমাকে লক্ষ্য করিয়া কহিল, বাবুজী, বাঙ্গালীন তো বহুৎ আচ্ছি। লড়নেওয়ালী হায়! হাঁটতি নহি ! আমি তাহার পানে চাহিতেও পারিলাম না। নিঃশব্দে মাথা হেঁট করিয়া কোন মতে ভিড় ঠেলিয়া উপরে পলাইয়া গেলাম । 5闵 সেদিন এমন প্ৰবৃত্তি হইল না যে নীচে যাই । সুতরাং, নন্দ-টগরের যুদ্ধের অবসান কি ভাবে হইল, সন্ধিপত্রে কোন কোন শর্তাদি নির্দিষ্ট হইল, কিছুই জানি না । তবে, পরে দেখিয়াছি, শর্ত যাই হোক, বিপদের দিনে সেই স্ত্র্যাপ-অফ-পেপারটা কোন কাজেই লাগে না। যাহার যখন আবশ্যক হয়, অবলীলাক্রমে ছিাড়িয়া ফেলিয়া দিয়া অপরের ব্যুহ ভেদ করে। বিশ বৎসর ধরিয়া তাহার এই কাজ করিয়াছে এবং আরও বিশ বৎসর যে করিবে না, এমন শপথ বোধ করি স্বয়ং বিধাতাপুরুষও করিতে পারেন भी । সারাদিন আকাশে ছেড়া মেঘের আনাগোনার বিরাম ছিল না ; এখন অপরান্ধুের কাছাকাছি একটা গাঢ় কালো মেঘ দিকচক্রবাল আচ্ছন্ন করিয়া ধীরে ধীরে মাথা তুলিয়া উঠিতে লাগিল। মনে হইল, সমস্ত খালাসীদের