পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ved €कस्छ শুইয়া পড়িলাম। নিশ্চয় জানি, জ্ঞান বিদ্যা ও বুদ্ধিতে আমি ঈহাদের সকলের বড়, তপাপি কিসের ব্যথায় জানি না, মনের ভিতরটা কঁাদিতে লাগিল এবং তেমনই অজানা কারণে চোখের কোণ বাহিয়া বড় বড় ফেঁটায় জল গড়াইয়া পড়িল । কতক্ষণ ঘুমাইয়াছিলাম জানি না, কানে গেল, ওগো নতুনগোসাই ? জাগিয়া উঠিয়া বসিলাম-কে ? আমি গো-তোমার সন্ধ্যেবেলার বন্ধু। এতো ঘুমুতেও পাবো! অন্ধকার ঘরে চৌকাঠের কাছে দাড়াইয়া কমললতা বৈষ্ণবী। বলিলাম, জেগে থেকে লাভ হ’তো কি ? তবু সময়টার একটু সদ্ব্যবহার হ’লো । তা জানি ; কিন্তু ঠাকুরের প্রসাদ পাবে না ? পাবো । তবে ঘুমুচ্চো যে বড় ? জানি বিঘ্ন ঘটবে না, প্ৰসাদ পাবোই। আমার সন্ধ্যেবেলাকার বন্ধু রাত্রেও পরিত্যাগ করবে না। বৈষ্ণবী সহস্যে কহিল, সে দাসী বৈষ্ণবের, তোমাদের নয়। বলিলাম, আশা পেলে বোষ্টম হতে কতক্ষণ ? তুমি গহরকে পৰ্য্যন্ত গোঁসাই বানিয়েছ, আর আমিই কি এত অবহেলার ? হুকুম করলে বেষ্টমের দাসানুদাস হতেও রাজী । কমললতার কণ্ঠস্বর একটুখানি গভীর হইল, কহিল, বৈষ্ণবদের সম্বন্ধে তামাসা করতে নেই গোঁসাই, অপরাধ হয়। গহরগোঁসাইজীকেও তুমি ভুল বুঝেছে। তার আপনি লোকেরাও তাকে কাফের বলে, কিন্তু তারা জানে না। সে খাঁটি মুসলমান, বাপ-পিতামহর ধৰ্ম্মবিশ্বাস সে ত্যাগ করে নি।