পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা জাপান-যাত্রীর পত্ৰ لالچ

  • ১৬ জ্যৈষ্ঠ । আজ জাহাজ জাপানের “কোবে? বন্দরে পৌছবে। কয়দিন বৃষ্টিবাদলের বিরাম নেই। মাঝে মাঝে জাপানের ছোট ছোট দ্বীপ আকাশের দিকে পাহাড় তুলে সমুদ্র যাত্রীদের ইসারা করচে-কিন্তু বৃষ্টিতে কুয়াশাতে সমস্ত ঝাপসা ;- বাদলার হাওয়ায় সন্দিকাশি হয়ে গলা ভেঙে গেলে তার আওয়াজ যেরকম হয়ে থাকে, ঐ দ্বীপগুলোর সেইরকম ঘোরতর সন্দির আওয়াজের চেহারা । বৃষ্টির ছাঁট এবং ভিজে হাওয়ার তাড়া এড়াবার জন্যে, ডেকের এধার থেকে ওধারে চৌকি টেনে নিয়ে নিয়ে বেড়াচিচ । ,

আমাদের সঙ্গে যে জাপানী যাত্রী দেশে ফিরচেন, তিনি আজ ভোরেই তঁর ক্যাবিন ছেড়ে একবার ডেকের উপর উঠে এসেচেন, জাপানের প্রথম অভ্যর্থনা গ্ৰহণ করবার জন্যে। তখন কেবল একটি মাত্র ছোট নীলাভ পাহাড় মানসসরোবরের মস্ত একটি নীল পদ্মের কুড়িটির মত জলের উপরে জেগে রয়েচে । তিনি স্থির নেত্ৰে এইটুকু কেবল দেখে নীচে নেবে গেলেন, তঁর সেই চোখে ঐ পাহাড় টুকুকে দেখা আমাদের শক্তিতে নেই-আমরা দেখাচি নুতনকে, তিনি দেখাচেন তঁর চিরন্তনকে, আমরা অনেক তুচ্ছকে বাদ দিয়ে দিয়ে দেখচি, তিনি ছোট বড় সমস্তকেই তার এক বিরাটের অঙ্গ করে দেখাচোন,-এই জন্যেই ছোটও তেঁার কাছে বড়, ভাঙা ও তার কাছে জোড়া ; অনেক তঁর কাছে এক । এই দৃষ্টিই সত্য দৃষ্টি। জাহাজ যখন একেবারে বন্দরে এসে পৌঁছল, তখন মেঘ কেটে গিয়ে সূৰ্য উঠেচে । বড় বড় জাপানী অন্সর নৌকোঁ, আকাশে পাল উড়িয়ে দিয়ে, যেখানে বরুণদেবের সভাপ্রাঙ্গণে সূৰ্য্যদেবের