পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VRy সবুজ পত্ৰ ফাত্তন, ১৩২৩ ধৰ্ম্মকে মন্দিরের গণ্ডীর মধ্যে বন্দী করিয়া জীবন নিয়মিত করে কেবল নিছক লাভক্ষতির হিসাব অনুসারে । ধৰ্ম্মকে জীবনের ভিতর 'গ্ৰহণ করিতে না পারিয়া আমরা সত্যের কাছে চিরদিন দেনাদার খাকিয়া যাইতেছি । এটা আমরা একটা স্বতঃসিদ্ধের মধ্যে ধরিয়া লইয়াছি যে খাটি ধৰ্ম্মের পথ ধরিয়া থাকিলে জীবনযাত্রায় আর সবার অনেক পিছনে পড়িয়া থাকিতে হইবে-এবং ধৰ্ম্ম অবশ্য মৌখিক হিসাবে সবার বড় হইলেও সাংসারিক হিসাবে সফলতাটাই জীবনের-চরম উদ্দেশ্য । সমস্ত সমাজ এবং সমস্ত জগৎ যখন এই নিময় মানিয়া চলিতেছে তখন যে প্রকৃত সত্যনিষ্ঠ তাহার পদে পদে সমাজের সঙ্গে যুদ্ধ করা ছাড়া উপায় নাই। আমি যাহা ধৰ্ম্ম, যাহা ন্যায়, যাহা সত্য বলিয়া জানিয়াছি, জীবনের প্রত্যেক কাৰ্য্যটি তাহাদ্বারা নিয়ন্ত্রিত করিতে না পারিলে আমি সত্যভ্ৰষ্ট হইব, অথচ, সে পথে চলিতে গেলে জগতের সঙ্গে নিরন্তর বিরোধ হইবেই। সত্যনিষ্ঠ যে তাহাকে কাজেই কৰ্ম্মবীর হইতে হইবে, সত্য জানিলে হইবে না, তাহাকে কাৰ্য্যে পরিণত করিতে হইবে, জীবনে তাহাকে আয়ত্ত করিতে হইবে। নহিলে সত্যলােভ বা সত্যরক্ষণ হইবে না। বাস্তবের সঙ্গে ন্যায় ও ধৰ্ম্মের বিরোধের কথাটা এত স্পষ্ট হইলেও এ বিষয়ে আমরা সত্য কথা বলিতে সব চেয়ে কুষ্ঠিত। ধৰ্ম্মের পথ হইতে যে যত দূরে সরিয়া থাকে সেই মুখে তাত বেশী ধৰ্ম্মের গৌরব ঘোষণা করে।--আর যদি কেহ ধৰ্ম্মের মানদণ্ডে জীবনের পরিমাণ করিয়া তাহার দোষ ক্ৰটি দেখাইয়া দেয় তরে সে সকলের কাছে নিন্দনীয় হয়। এই বিরোধের মূল কারণগুলি অনুসন্ধান করিলে দেখিতে পাই