পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, একাদশ সংখ্যা শিক্ষায় লক্ষ্য V8) যে নিছক বোকামী ছাড়া আরও কিছু আছে, তাহাতে অতি-বুদ্ধিমান ভিন্ন আর কৈহ সন্দেহ করিবেন না। আমরা স্পষ্ট করিয়া বলিতে চাই যে, বিদ্যাশিক্ষাই যে কাৰ্য্যত শিক্ষার লক্ষ্য হইয়া আছে, কেবল তাহাই নহে-প্রকৃতপক্ষে উহাই শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত। একটু ভাবিয়া দেখিলে বোঝা যাইবে যে, বিদ্যাশিক্ষা জিনিসটা মানবসমাজের যুগযুগান্তরসঞ্চিত সভ্যতার সহিত এ পৃথিবীতে নবাগত মানব সন্তানের পরিচয় করান। এই পরিচয় শিক্ষার দ্বারা হওয়াই সম্ভব, এবং শিক্ষা ভিন্ন আর কোনও রকমেই হইবার উপায় নাই। আদিম কাল হইতে বৰ্ত্তমানকাল পৰ্য্যন্ত বহু-আয়াসলব্ধ সভ্যতার ফল নানা বিদ্যারূপে সঞ্চিত আছে ও হইতেছে। শিক্ষা এই বিদ্যাগুলির সঙ্গে মানুষেরঙ্গপরিচয় সাধনা করে। অতি সভ্যসমাজের শিশুও অসভ্য হইয়া জন্মায়, এবং শিক্ষার মধ্য দিয়ী এই বিদ্যাগুলির সহিত পরিচয় লাভ না করিলে অসভ্য অবস্থাতেই বাড়িয়া । উঠিত। অসভ্য অর্থে বুদ্ধিহীনও নয়, হৃদয়হীনও নয়,--অসভ্য অর্থে বিদ্যাহীন। আসভ্যোর সমাজ সেই সমাজ, যাহার প্রতিপুরুষের লোকের জন্য পূর্বপুরুষের ও পূর্বকালের এমন কোনই সঞ্চিত বিদ্যা নাই, যাহা সে শিক্ষার দ্বারা আয়ত্ত করিতে পারে। সভ্য সমাজের লোক স্কল কলেজে শিক্ষা না পাইলেও বংশানুক্রমের ফলে এবং সামাজিক অবস্থার প্রভাবে মোটামুটী সভ্য সমাজেচিত বুদ্ধি ও চরিত্র লাভ করে ; কিন্তু রীতিমত শিক্ষা না পাইলে অতি বড় পণ্ডিতবংশের প্রতিভাবান সন্তানও মুর্থই থাকিয়া যায়। কেননা বিদ্যায় বংশানুক্ৰম নাই। সকল রকম বিদ্যাই প্রতি যুগের লোককে নূতন করিয়া আয়ত্ত করিতে হয়। এবং এই ক্রমাগত নুতন চেষ্টার ফলেই মনুষ্যসমাজের লব্ধ বিদ্যা প্রালব্ধ না হইয়াও রক্ষিত হয়। যদি পৃথিবীর একপুরুষের