পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৮ সবুজ পত্র শাবণ, ১৩২৫ আপনার তপঃ প্রভাবে মানুষই অর্থকে মন্ত্রে পরিণত করেছে আপনার উগ্র তপস্যায়। ভাষা মানুষের জন্ম দেয় নি—তার প্রাণেরও না, মনেরও না, হৃদয়েরও না। এই কথাটা আমাদের আজ ভাল করে বুঝতে হবে যে, যে-কোন যুগের চাইতে অনন্তকাল অনেক বড়—আর সে অনন্ত কালে মানুষের জীবনে কতরকম সম্ভব অসম্ভব ঘটতে পারে তার পরিমাণ কেউ দিতে পারে না—তার অনুমান কেউ করতে পারে না। আমা- দের বুঝতে হবে যে, যে কোন জাতি, যে-কোন সমাজ, যে-কোন নেশানের চাইতে প্রত্যেক মানুষ অনেক বড়–নইলে জাৰ্মাণীর ষ্টেট আইডিয়া হত সমাজ-সমস্যার শেষ ও শ্রেষ্ঠ মীমাংসা। আবার যে- কোন মানুষের চাইতে প্রত্যেক কবি বড়–নইলে এ পৃথিবীতে সবার চাইতে তাজ্জব ব্যাপার হত-ইংলিশ নেশানের মতো একটা নেশানের পক্ষে শেক্সপীয়রকে জন্ম দেওয়া। সুতরাং যে-কোন কবির চারপাশে তার জাতীয়তার দোহাই দিয়ে গণ্ডি টানলে, সেই কবিকেই আমরা ছােট করব—তার জাতিকে বড় করতে পারব না। কিন্তু সাহিত্যে জাত বাঁচিয়ে চলার দল আজ এই বলে আব্দার ধরেছেন যে, আমাদের যদি কাব্য লিখতে হয়, তবে সেকাব্য লিখতে হবে বৃন্দাবনের, সে জিওগ্রাফির বৃন্দাবনই হােক, বা হৃদ- বৃন্দাবনই হােক; আমাদের যদি গান বাঁধতে হয়, তবে সে-গান হওয়া চাই রাধাকৃষ্ণের—তা সে রাধাকৃষ্ণ পৌরাণিকই হােক বা আধ্যা- ত্মিকই হােক; যদি নাটক লিখতে হয় ত শ্রীরাধার মানভঞ্জন-বড় তাের সুভদ্রাহরণ। কিন্তু রাধাকৃষ্ণই বাঙ্গালী কবির অন্তরে চিরটা কাল সত্য হয়ে থাকবে সৃষ্টির কোন্ নিয়মানুসারে, সেটা অবশ্য আমাদের