“বহু আছে ধনী, বহু, আছে মানী
সবাই হয় না রাণী কল্যাণী।”—
কাহিনীর এইই হ’ল শেষ সিদ্ধান্ত। আমরাও এবিষয়ে সম্পূর্ণ একমত। দানই কলির প্রধান তপস্যা। “নয়নারায়ণের’’ সেবা! কিন্তু যত দোষ থাকে থাক, ক্ষীরোদাসীকে আমরা কোন মতেই ভুলতে পারব না। তার যে-সব চোখা চোখা যুক্তিবাণ, সে সব বড় বড় তার্কিকের তর্কেরও অতীত;—
“ক্ষিধের অভাব কা’রও হয় না।
চন্দ্রপুলিটা সবার রয় না।”
অথবা “খাবার ত’ নয় ক্ষিধের অধীন”
এ ছাড়া,—
“যেটা দিয়ে দাও সেটা যে রয় না,
এর চেয়ে কথা সহজ হয় না।”
এসব বড় বড় কথা বিধি-বদ্ধ প্রবাদবাক্যে পরিণত হয়ে থেকে তাকে এবং তার মন্ত্রী বা মন্ত্রিণী মালতীকে বাঙ্গালা সাহিত্যে অমর করে রাখবে।
“পুরাণো শাস্ত্রে লিখেছে শোলোক,
গরীবের মত নেই ছোটলোক।”
এক কথাতে এতখানি প্রকাশ মার্ক্স সাহিত্যে বা তাঁর চেলাদের সাতশো পাতার বিস্তৃত প্রবন্ধে খুঁজে পাওয়া যায় না। বড় দুঃখেই বেচারী বলে উঠেছিল;—
“ঐ-রে হয়েছে মাথাটি খাওয়া
তোমারও লেগেছে দাতার হাওয়া?
না যাও তুমি মায়ের বাড়ীতে
এখানের হাওয়া সবে না নাড়ীতে।”