পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৪১১

শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের বহুসংখ্যক উপন্যাসে চিত্রিতা অনেক নারীচিত্রই আমাদের ভাল লেগেছে। ভালকে তো ভাল লাগেই, কিন্তু মন্দের মধ্যে যারা ভাল, তাদের ভাল দিকটাকে দেখিয়ে তাদের পরে মায়া জন্মে দেওয়ার যে প্রয়োজনীয়তা আছে, ইনি সে বিষয়ে ভাষার সংযম দিয়ে নৈপুণ্যের সঙ্গে তবু কতকটা লক্ষ্য রেখেছেন। শরৎচন্দ্রের সাবিত্রী, চন্দ্রমুখী, বিজলী, বৌদ্ধযুগের আম্রপালি, বসন্তসেনা, বাইবেলের মেরী ম্যাগডালেন এদের সমজাতীয়াদের আমরা নিশ্চয়ই মায়া করে থাকি, জগতের একজন মহাপুরুষই ত’ এ বিষয়ে আমাদের উপদেশ দিয়েছেন,—“পাপকে ঘৃণা করবে, কিন্তু পাপীকে নয়।”

 রামপদ মুখোপাধ্যায়ের “শাশ্বত পিপাসা” হাসিকান্নার মলয়-শিশিরে সিক্ত ছবিটী বাঙ্গালী মধ্যবিত্ত সংসারের প্রস্ফুট চিত্র।

 জলধর চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত নাটক “রীতিমত নাটক”-এর অধ্যাপকের আদর্শচরিত্রা শিক্ষিতা বোনটী অত্যাধুনিকতার অসংযম যা’ মধ্যে মধ্যে সংসারেও দেখা যায় তাই-ই। পত্নীর চরিত্রটী সুসংযত ও সুসঙ্গত। নাট্যজগতে চরিত্রসৃষ্টিতে শান্তাচরিত্র একান্ত একঘেয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে;—অবশ্য সমাজেও;—এবং তার কারণও যথেষ্ট রয়েছে, প্রতিবিধান নিরপেক্ষ!

 প্রবোধকুমার সান্ন্যালের পরবর্তী রচনায় যুগোচিত ভাব ও ভাষার সংযম লক্ষণীয়।…‘বৌদি’ চরিত্রটী বঙ্গসাহিত্যে নূতন দান। দেশের কাজে যে সব বাস্তবনারীরা যোগ দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যেও খাঁটি সোনা ও মেকি আধলা দু’একটা মিশে মিলে আছে। বৃহৎকাণ্ডে এ রকম হয়েই থাকে, তার মধ্য থেকে