পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
সাহিত্য-চিন্তা

প্রতি অঙ্গভঙ্গী, হাসি, কান্না, খেলা, মাতার চক্ষে কত সৌন্দর্য্য ঢালিয়া দেয়! যে বৃক্ষটি আমি যত্নে রোপণ করি—তাহাতে সতত জল সেচন করি, অন্যের নিকট না হউক, সে বৃক্ষ আমার নিকট কত সুন্দর।

 যে প্রেমের উন্মেষ সাধনসাপেক্ষ, তাহার নামই সাধন-বিকশিত প্রেম। যে স্বর্গের ধনে মনুষ্যের জন্ম সার্থক হয়, জগৎ আনন্দময় হইয়া উঠে, তাহা কখনও সাধনা ভিন্ন লাভ হইতে পারে না।

 সমুদ্র নীল দিগন্তকে আলিঙ্গন করিয়া অনন্তপ্রবাহে শোভা পাইতেছে; পর্ব্বত হিমানীমণ্ডিত বেশে শুভ্রজটাজুট-ধারী যোগীর ন্যায় বিরাজ করিতেছে; কত ফুল বনে ফুটিয়া উঠিয়া মাধুরী ঢালিতেছে; লতা তরুর শ্যাম অঙ্গে বায়ু-হিল্লোলে দুলিয়া দুলিয়া যেন সৌন্দর্য্য ছড়াইতেছে। পাখীর কলকণ্ঠে, ভ্রমর গুঞ্জনে, ঝিল্লীর নিশীথ-গীতি-ধ্বনিতে কত মাধুর্য্য! এ সকল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য কি সকলে সমান ভাবে অনুভব করিতে সমর্থ হয়? কবি, ভাবুক ও ভক্তের প্রাণে যেমন সৌন্দর্য্যের অনুভূতি, সাধারণের পক্ষে তাহা কখনও সম্ভবপর নহে। এই প্রেম, যদিও স্বভাব হইতেই জন্মে, তথাপি সাধন ভিন্ন তাহা বিকশিত হইতে পারে না।