পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা চতুর্থ খণ্ড.pdf/৪০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

x 8 শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাড়ীর গোয়ালঘরে। সেখানে আমি পড়ি, তারা শোনে। এখন আর পড়িনে, লিখি । সেগুলো কারা পড়ে জানিনে। একই স্কুলে বেশী দিন পড়লে বিদ্যা হয় না, মাষ্টার মশাই স্নেহবশে একদিন এই ইঙ্গিতটুকু দিলেন। অতএব আবার ফিরতে হলো সহরে । বলা ভাল, এর পরে আর স্কুল বদলাবার প্রয়োজন হয়নি । এই বার খবর পেলাম বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলীর । উপন্যাসসাহিত্যে এর পরেও যে কিছু আছে তখন ভাবতেও পারতাম না, প’ড়ে পড়ে। বইগুলো যেন মুখস্থ হয়ে গেল । বোধ হয়, এ আমার একটা দোষ । অন্ধ অমুকরণের চেষ্টা না করেছি যে নয়, লেখার দিকৃ দিয়ে সেগুলো একেবারে ব্যর্থ হয়েছে ; কিন্তু চেষ্টার দিক্ দিয়ে তার সঞ্চয় মনের মধ্যে আজও অনুভব করি । তার পরে এল বঙ্গদর্শনের নবপর্য্যায়ের যুগ, রবীন্দ্রনাথের চোখের বালি, তখন ধারাবাহিক প্রকাশিত হচ্ছে। ভাষা ও প্রকাশভঙ্গীর একটা নূতন আলো এসে যেন চোখে পড়ল। সে দিনের সে গভীর ও সুতীক্ষ আনন্দের স্মৃতি আমি কোন দিন ভূলব * না । কোন কিছু যে এমন করে বলা যায়, অপরের কল্পনার ছবিতে নিজের মনটাকে যে পাঠক এমন চোখ দিয়ে দেখতে পায়, এর পূৰ্ব্বে কখন স্বপ্নেও ভাবিনি। এত দিনে শুধু কেবল সাহিত্যের নয়, নিজেরও যেন একটা পরিচয় পেলাম। অনেক পড়লে যে তবে অনেক পাওয়া যায়, এ কথা সত্য নয়। ওইতো থানকয়েক পাতা, তার মধ্য দিয়ে যিনি এত বড় সম্পদ সে দিন আমাদের হাতে পৌছে দিলেন, তাকে কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা পাওয়া যাবে কোথায় ? এর পরেই সাহিত্যের সঙ্গে হলে আমার ছাড়াছাড়ি, ভুলেই ।