পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারকনাথ ও জ্ঞানাঙ্কুর’ * > যখন দিনাজপুরে আইসেন, তখন সাহিত্য সম্বন্ধে বহু আলাপ র্তাহার সঙ্গে হইত। ‘স্বর্ণলতা’র এক কি দুই অধ্যায় মাত্র তখন লেখা হইয়াছে এবং রাজসাহীর বাবু শ্ৰীকৃষ্ণ দাসের ‘জ্ঞানাঙ্কুর’ পত্রে তাহ প্রকাশিত হইয়াছে। তারকনাথ আমাকে আপন রচনা দেখাইলেন, এবং জ্ঞানাঙ্কুরে লিখিতে অনুরোধ করিলেন। সেই অনুরোধের ফলে ১২৮০ সালের বৈশাখ মাসের শেষ ভাগে কি জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রারম্ভে আমি ‘কল্পতরু' লিখি ...“কল্প তরু” রাজসাহী গেল, শ্রীকৃষ্ণ দাস , মহাশয় পুস্তক পাওয়া সংবাদ দিলেন ; তাহার পর তাহার সঙ্কট উপস্থিত হইল,—পুস্তক ‘জ্ঞানাঙ্কুরে প্রকাশিত না হইলে তারকনাথ চটিবেন, হয়ত আমিও চটব ; প্রকাশিত হইলে শ্ৰীকৃষ্ণ বাবুর নিজের অপ্রিয় কাৰ্য্য হইবে । অতএব শ্রীকৃষ্ণ বাবু “ন যযৌ ন তস্থো” হইলেন । এজন্য আমিও তাগাদ আরম্ভ করিলাম ; প্রায় ৫,৬ মাস কি তদধিক কাল পরে, শ্ৰীকৃষ্ণ বাবু বিনয়পূর্ণ এক পত্রে আমাকে জানাইলেন যে, ‘কল্প তরু” উপাদেয় গ্রন্থ বটে, কিন্তু তাহ: “ব্রহ্মের” নিন্দাস্থচক, কেমন করিয়া তাহা জ্ঞানাঙ্কুরে প্রকাশিত হইতে পারে । আমি কৃতাৰ্থ হইলাম, শ্ৰীকৃষ্ণ বাবুকে অভয় দিলাম, ‘কল্পতরু ফিরিয়া পাইলাম ”—“বঙ্গ-ভাষার লেখক, পৃ. ৭৫৪-৫৫ । ‘স্বর্ণলতা'র কল্যাণে জ্ঞানাঙ্কুরে’র গ্রাহক-সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাইয়াছিল । ‘স্বর্ণলতা’ই ‘জ্ঞানাঙ্গুরে’ প্রকাশিত তারকনাথের একমাত্র রচনা নহে ; তাহার গল্প-প্রবন্ধাদি আরও অনেক রচনা ইহার পৃষ্ঠা অলঙ্কত করিয়াছিল । তারকনাথ কাব্যানুরাগীও ছিলেন ; ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ এক সময়ে তাহার প্রিয় পাঠ্য ছিল, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের কবিতা তাহাকে আনন্দ দান করিত । তিনি নিজেও কবিতা রচনা করিতে পারিতেন । সরকারী কার্য্যে কলিকাতা হইতে বন্ধুবান্ধবীন স্বদুর প্রবাসে আসিয়া প্রথমটা তিনি নিজেকে নিতান্ত নিঃসঙ্গ মনে