যুদ্ধ করিতে লাগিলেন, মীর মদনকে সকলে ধরাধরি করিয়া সিরাজদ্দৌলার সম্মুখে উপনীত করিলেন। তিনি বেশী কিছু বলিবার অবসর পাইলেন না, কেবল এইমাত্র বলিলেন যে, শত্রুসেনা আম্রবণে পলায়ন করিয়াছে তথাপি নবাবের প্রধান সেনাপতিগণ কেহই যুদ্ধ করিতেছে না, সসৈন্যে চিত্রার্পিতের ন্যায় দাঁড়াইয়া রহিয়াছেন।[১] মীরমদনের বীরবাহু অবসন্ন হইল, সিরাজদ্দৌলার মাথায় আকাশ ভঙ্গিয়া পড়িল। মাত্র মীরমদনের ভরসা পাইয়া সিরাজদ্দৌলা শত্রুদলের কুটিল কৌশলে ভ্রূক্ষেপ করেন নাই; তাঁহার আকস্মিক মৃত্যুতে সিরাজের বল ভরসা অকস্মাৎ তিরোহিত হইয়া গেল।
সিরাজ অনন্যোপায় হইয়া আর একবার মীরজাফরকে উত্তেজিত করিবার জন্য তাঁহাকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। মীরজাফর অনেক ইতস্ততঃ করিয়া, অনেক কালহরণ করিয়া, অবশেষে প্রিয়পুত্র মীরণ এবং পাত্রমিত্রদিগের সহিত দলবদ্ধ হইয়া সতর্কপদবিক্ষেপে সিরাজের পটমণ্ডপে প্রবেশ করিলেন।[২] মীরজাফর ভাবিয়াছিলেন যে, সিরাজদ্দৌলা হয় ত তাঁহাকে বন্দী করিয়া ফেলিবেন, কিন্তু পটমণ্ডপে প্রবেশ করিবামাত্র সিরাজ তাঁহার সম্মুখে রাজমুকুট রাখিয়া দিয়া ব্যাকুল হৃদয়ে বলিয়া উঠিলেন, “যাহা হইবার তাহা হইয়াছে, তুমি ভিন্ন এই রাজমুকুট রক্ষণ করেন এমন আর কেহ নাই; মাতামহ জীবিত নাই, তুমিই এখন তাঁহার স্থান পূর্ণ কর। মীরজাফর! আলিবর্দ্দির পুণ্যনাম স্মরণ করিয়া আমার