পহর রাত পর্য্যন্ত ওকে কেবল খ্যাঁকশেয়ালির ঘাড়ের মাংস খেয়ে থাকতে হবে, তা-ও, হয় ওর পিসতুতো বোন কিম্বা মাসতুতো শ্যালার মেজো ছেলে ছাড়া আর কেউ শিকার করলে হবে না, আর ওকে খেতে হবে পিছনের ডানদিকের থাবা দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে। এত বড়ো শাস্তির হুকুম শুনেই বাঘের গা বমি-বমি ক’রে এল; চার পায়ে হাত জোড় ক’রে হাউ হাউ করতে লাগল।
কেন, কী এমন শাস্তি।
বলো কী, খ্যাঁকশিয়ালীর মাংস!—যতদূর অশুচি হোতে হয়। বাঘটা দোহাই পেড়ে বললে, আমাকে বরঞ্চ নেউলের ল্যাজ খেতে বলল সেও রাজি, কিন্তু খ্যাঁকশেয়ালির ঘাড়ের মাংস!
শেষকালে কি খেতে হোলো।
হোলা বই কী।
দাদামশায়, বাঘেরা তাহোলে খুব ধার্ম্মিক।
ধার্ম্মিক না হোলে কি এত নিয়ম বাঁচিয়ে চলে। সেইজন্যেই তো শেয়ালরা ওদের ভারি ভক্তি করে। বাঘের এটো প্রসাদ পেলে ওরা বর্ত্তিয়ে যায়। মাঘের ত্রয়োদশীতে যদি মঙ্গলবার পড়ে তাহোলে সেদিন ভোর রাত্তিরে ঠিক দেড় প্রহর থাকতে বুড়ো বাঘের পা চেটে আসা শেয়ালদের ভারি পুণ্যকর্ম্ম। কত শেয়াল প্রাণ দিয়েছে এই পুণ্যের জন্যে।
পুপুর বিষম খট্কা লাগল। বললে, বাঘরা এতই যদি ধার্ম্মিক হবে তাহোলে জীব হত্যে ক’রে কাঁচা মাংস খায় কী ক’রে।
সে বুঝি যে-সে মাংস। ওযে মন্ত্র দিয়ে শোধন করা।
কী রকম মন্ত্র।
ওদের সনাতন হালুম মন্ত্র। সেই মন্ত্র প’ড়ে তবে ওরা হত্যা করে। তাকে কি হত্যা বলে।
যদি হালুম মন্ত্র বলতে ভুলে যায়।
৫৬