পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रै२,8 সে খানিকট। হাসিল, তাছার পর বলিল,"রসিক বাবু, তিনি রসের কথা কন " আমি । আচ্ছ, কি গান বেঁধেছেন তিনি, জামাকে শুনিয়ে দে দেথি । সে গাহিল ৪— ”তোম্ তোম্ তান নানা তা ধিন্‌ ধিন্‌ তা ধিয়া । আও রে মোর পিয়ারীজান আও রে পিয়ারীয় । তোরে গলায় দিব মটরদান কানে ঢেড়সিয়া । তোরে থাইতে দিব মেীয়াপান কয়ব তোরে বিয়া ॥ বাজবে মাদল ধুম ধুম্‌ গুম্‌ গুণ ক্য। বাৎ কেক্কা হিয়৷ ৷ অtণ্ড রে মোর পিয়ারীজগন্‌ নাচ রে পিয়ারীয় ॥" গান শুনিয়া আমারও অবস্থা তাঁহারই মত হইয়া পড়িল। হাসিতে যেন পাজরা ভাঙ্গিয়৷ পড়িল । মগরার কিন্তু সে হাসির ছোয়াচ লাগিল না। সে গম্ভীরভাৰে মৃত্যুহাস্তে বলিল, “বাবুজীর বডড হাসি লেগেছে I* আমি বহু কষ্টে হাসি সামলাইয়া বলিলাম, “তোর পিয়ারীজান গান গুনে খুনী হয়েছিল ত?” সে বলিল, “তা আর হবে না ? ভারি নাচন নেচেছিল তান ।” এই সময় নীচের রাস্তায় মেয়েলী গানের চীৎকণর উঠিল । মগর ত্র্যস্তে বলিল, “ঐ গো, সব ধরে চলেছে, সাজ আসছে। চল, বাবুজী, আর বিলম্ না ।” আমি চারিদিকৃ চাহিয়া সাজের লক্ষণ কিছুই দেখিলাম না । চারিদিক তখনও বেশ উজ্জল । কেবল আকাশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একটা মৃtলাভ বৃহৎ নক্ষত্রের প্রতিবিম্ব দেখা গেল। ইহা সিরিয়াস বা বৃহস্পতি, তাহ মুঝিতে পারিলাম না । জ্যোতিৰ্ব্বিস্তার আলোচনা করি নাই বলিয়। আজ হঠাৎ মনে একটা আপশেষ জাগিয়া উঠিল । ষাহ। হউক, আমি মগরার কথা অমান্ত করিতে পারিলাম না, সঙ্গে সঙ্গেই নামিয়া চলিলাম। সে উপর হইতে নীচে তাহদের ক্ষুদ্রগ্রামখানি আমাকে দেখাইঃl; দিল । সেই দিকেই তখন কাষ্ঠবাহী স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী নরনারী দ্রুত চলিতেছিল । চলিতে চলিতে হঠাৎ পাহাড়ের এক জায়গায় অস্তৃত ত্রিকোণ চুড়া দেখিতে পাইলাম । মগর সহস থমকিয় দাড়াইল ; ভীত কটাক্ষে বলিল, “ও, এ কোন পথে এসে পড়েছি । যে গান গাওয়ালে, বাবুজী, রাস্ত ভুল হ'য়ে গেল।” আমি । কেন, এখানে কি ? মগর । কথা ক’য়ে না মশাই, তফাতে চ’লে এস । সে এমন হেঁচক টানে আমাকে কতকটা দূরে অনিন্ম ফেলিল যে, তাহার হস্তের ভর মা পাইলে নিশ্চরই অামি পড়িয়া যাইতাম । সে সেই ত্রিকোণ প্রস্তরচুড়া ছাড়াইয় পাশের বনের মধ্যে আসিয়া আমার হাত ছাড়িয়া দিবামাত্র আমি একটা গুড়ির উপর বসিয়া পড়িলাম। তাছার পর কিছুক্ষণ দম লইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “এত ভয় পেলি কেন ?” মগর। ওটা ভূতের পাহাড়, মশাই। আমি । দিনের বেলা ভূতের তয় কি ? মগরা। সাজ ত এল। আমি । ঠিক যেন একটা কাট গম্বুজের মত দেখতে । উপরে কি পথ আছে ? মগর। নীচের দিক্ থেকেও একটা মুড়ঙ্গ পথ আছে । আমি। চল না, একবার দেখে আসি । সে সভয়ে বলিল, “ও যে ভূতের রাজ্যি । পুরান দুষ্ট, রাজার আমলে ওটা ছিল জেলখান। উপর থেকে মানুষকে নীচে ফেলে দিত। আর এখন পাহাড়-পারের কবলা জাতরা এসে ঐখানে মানুষ বলি দিরে দেও-পূজা করে।” হঠাৎ যেন একটা করুণ আৰ্ত্তনাদ শুনিলাম, কল্পনা না কি ? “শুনছিস মগর " মগরী । চল মশাই, ওঠ ; পা চালিয়ে চল । আমি উঠিলাম। আবার সেই অফুট ক্রন্ধনধ্বনি । আমাকে তাঁহা নিৰ্ভীক, সবল, সতেজ করিয়া তুলিল । o মগরা কাদিতে লাগিল। বলিল, “ও ভূতের ডাক মশাই—মাছুষের কাল্লা নয়।” অামি বলিলাম, “মাজুয়ের স্বর এটা নিশ্চয়ই, ভয় কচ্ছিস্ কেন ? চল আমার সঙ্গে।” আমি তাহার হাত ধরিলাম। এক টানে হাত ছাড়াইয়া