পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Romantic লাগছিল-লাল মণ্ডলের টোলার ওদিকের মেরাক্ষেত থেকে একটা বুনো শুয়োর ঘোৎ ঘোৎ ক’রে চলে গেল। বামা বৈরিজের বাসাটা ছাড়িয়ে মাঠের মধ্যে প’ড়ে ঘোড়াটা যা ছুটলো-একেবারে জঙ্গল-মাথার ওপরে নক্ষত্রভরা আকাশ । কাছারীতে এসে দেখলাম। ললিতবাবু Traverse টেবিলের জন্যে Draftটা পাঠিয়ে দিয়েছেন। মানী ভাগলপুর থেকে এসেছে। টেবিলের উপর গ্লাসের জলে তিনটে বড় ম্যাগনোলিয়া সাজানো । ॥ »१३ ५éष्टिब्ल, »०२ध्z ॥ বৈকালের দিকে ঘোড়া নিয়ে বেড়াতে গেলাম। এক দৌড়ে এতটা পথ কোনো ঘোডাকে আমি যেতে দেখি নি । সোধাইটোলার ওপারের মাঠে অনেক খেড়ীর গাছ গত বৎসরের বীজ থেকে বেরিয়েছে । সেখানে ঘোড়াকে ছেড়ে দিয়ে একটা সিগারেট ধরলাম । তারপর সিগারেটের ধোয়া ওড়াতে ওড়াতে ও কুণ্ডলীকৃত ধোয়াটা নাকের সামনের বাতাসে ক্রমে ক্রমে মিশে যাচ্ছে, দেখতে দেখতে ধীর, শান্তভাবে ঘোড়া চালিয়ে লো ধাইটোলার খামার দিয়ে নিয়ে এলাম। আজ খুব হাওয়াটা । ১৮ই এপ্রিল, ১৯২৮ ৷৷ আজও খেড়ীক্ষেত গিয়ে ঘোড়া ছেড়ে দাঁড়ালাম ! পাহাড়টা বড় সুন্দর দেখা যাচ্ছে-আসরফিকে কাল বড় রেগে গিয়ে চাবক নিয়ে মারতে গিয়েছেলাম । সে আমাকে ক্ষেত দেখিয়ে নিয়ে বেড়ালে । আজকাল এই অপরাহ্নগুলো যে কি সুন্দর লাগে ! প্ৰতিদিন লেখার কাজ সেরে এই পাহাড়ের এপারে লোধাইটোলায় খেড়ীক্ষেতে ঘোড়া ছেড়ে দিয়ে দাড়াই। আজ অপূর্ব ভােব মনে এল। সেই বোর্ডিং থেকে গ্রীষ্মের ছুটীতে এসে সোদালি ফুলভরা ঝোপের তলা দিয়ে সকালবেলা মাঠে বেড়াতে যাওয়া – সেই ওধারের মােঠটা-দিগ্ধ নদীজলের গন্ধ-উমা পদ্মফুল দিয়ে শিবপুজো করতো-সেই গ্রামের হাওয়ায় মাঠের রূপে, নদীজলের স্নিগ্ধতায়, ফুলেফুলে আত্মা গড়ে উঠেছিল--কি অপূৰ্ব আনন্দই এরা জীবনে এনে দিয়েছিল একদিন । আজও সে সব আছে-কিন্তু তাদের যেন ছেড়ে দিয়েছে, আর তারা আমার নয়। শৈশবের সে গ্রাম এখন আমার কাছ থেকে বহুদূর চলে গিয়েছে—সে সব পুরোনো পাখীর ডাক, ফুল ফলের সুগন্ধ, স্নেহময় মুখের হাসি স্বপ্ন হয়ে দূর অতীতে ܠ ܘ