পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেই পুকুর ঘাটের বাধা পৈঠায় এই জ্যোৎস্নালোকে এখন কি হচ্ছে ? সময়ের গতি আগে থেকে কত সামনে চলে এসেছে যে ! আজি যদি এক্ষুনি আবার সেখানে যাই ? সেই বাড়ী আছে, সেই পুকুরঘাট আছে, সেই ঘরদের আছে কিন্তু সে মানুষ কৈ ? পাটনা যেন হয়ে গিয়েছে বাড়ী । পাটনায় এসে বড় ষ্টেশনে গিয়ে ব্যক্তিয়ারপুরের গাড়ীর সময় জিজ্ঞাসা করে নিলাম। বৈকুণ্ঠ বাবু ও র্তার চাপরাসী প্লাটফৰ্ম্মে পাঞ্জাব মেল ধরবার জন্যে দাড়িয়ে দেখলাম । তারপর পুটুলি হাতে জ্যোৎস্নাভিরা রাজপথ দিয়ে হেঁটে আসতে আসতে মনে মনে হ’ল কি ভবঘুরেই হয়ে পড়েছি ! কোথায় বাড়াঘর আর কোথায় সাবন জেলা, পাটনা জেলা, গয়া জেলা ক’রে কত দিনটা কাটলে । সেই আদিনাথ পাহাড়, আগরতলা, কুমিল্লা, উজীরপুর সেই রাত্রে খালে বেড়ান, ইসলামিকাটি সেই জয়পুর ডাকবাংলা-চানন নদী, শালবন । পাটন। ল প্রেসের কাছে এসে কল্পনায় আমাদের গ্রামের বাড়ীতে ফিরে গেলাম । ? ?----------lد$\------۔ --দোর খুলে গেল - ‘কে বিভূতি ? মণি এল, জাফরী এল, সুন্টু এল। মাকে জিজ্ঞাসা করলাম, কালী বাড়ী আছে ? ওধারে নেড়ার বাবা কাশছে। বাড়ী-বাড়ী, কতদিন পরে নিজের পুরোনো ভিটাতে মার কাছে গিয়েছি ? কিছুই না অবিশ্যি। ছাতিম ফুলের ঘন গন্ধ বেরুচ্ছে । একটা মোটর আসছে-সরে দাঁড়ান গেল । একটা লোক আমাকে ইঠা করে দাড়িযে থাকতে দেখে বললে আপ কাহা যাইয়োগ ? ভাবলে বুঝি পথ হারিয়ে গেছি। বৈকুণ্ঠ – বাবুর বাড়ী এসে সারাদিনের মেলার ধুলো বেশ করে ধুয়ে আরাম করে অফিস ঘরের টেবিলে বসে লিখছি, কিন্তু কি বিকট মশার উৎপাত ! ৷ রাত নট, ৭ই নভেম্বর, ১৯:২৭, পাটনা ৷ একজন পুরোনো আমলের বিদ্যার্থীর পাথর-বাঁধানো শোবার যাযগায় বসে লিখছি। কোন বিদ্যার্থীর সুখে-দুঃখে মণ্ডিত ছিল হাজার বছর আগেকার এই প্রাচীন দিনের কোঠাটি-এই বিদ্যার্থীর আমলটি কে জানে ? কোন, দেশ থেকে শেষ বিদ্যাধী এসেছিল ? কি ছিল তার ইতিহাস ? কে তাঘ বাপ-মা ? তার তার কোন আনন্দভরা শৈশব-কাহিনী ? কোন দেশে কোন নদীর ধারের শ্যামল & እ