পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
খ্যাতির বিড়ম্বনা



প্রথম ব্যক্তির প্রবেশ

 দুকড়ি। (চৌকি সরাইয়া) আসুন— বসুন। মশায় তামাক ইচ্ছে করুন। ওরে— পান দিয়ে যা।

 প্রথম। (স্বগত) আহা, কী অমায়িক প্রকৃতি। এঁর কাছে কামনা সিদ্ধি হবে না তো কার কাছে হবে!

 দুকড়ি। মশায়ের কী অভিপ্রায়ে আগমন?

 প্রথম। আপনার বদান্যতা দেশবিখ্যাত।

 দুকড়ি। ও-সব গুজবের কথা শোনেন কেন?

 প্রথম। কী বিনয়। কেবল মশায়ের নামই শ্রুত ছিলুম, আজ চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জন হল।

 দুকড়ি। (স্বগত) এখন আসল কথাটা যে পাড়লে হয়। বিস্তর লোক বসে আছে। (প্রকাশ্যে) তা মশায়ের কী আবশ্যক?

 প্রথম। দেশের উন্নতি-উদ্দেশ্যে হৃদয়ের—

 দুকড়ি। আজ্ঞে সে-সব কথা বলাই বাহুল্য—

 প্রথম। তা ঠিক। মশায়ের মতো মহানুভব ব্যক্তি যাঁরা ভারতভূমির—

 দুকড়ি। সমস্ত মানছি মশায়, অতএব ও-অংশটুকুও ছেড়ে দিন। তার পরে—

 প্রথম। বিনয়ী লোকের স্বভাবই এই যে নিজের গুণানুবাদ–

 দুকড়ি। রক্ষে করুন মশায়, আসল কথাটা বলুন।

 প্রথম। আসল কথা কী জানেন— দিনে দিনে আমাদের দেশ অধোগতি প্রাপ্ত হচ্ছে—

 দুকড়ি। সে কেবলমাত্র কথা সংক্ষেপ করতে না জানার দরুন।

৩৯