সুকান্ত সমগ্র/অপ্রচলিত রচনা/মার্শাল তিতোর প্রতি

মার্শাল তিতোর প্রতি২৫

কমরেড, তুমি পাঠালে ঘোষণা দেশান্তরে,
কুটিরে কুটিরে প্রতিধ্বনি,—
তুলেছে মুক্তি দারুণ তুফান প্রাণের ঝড়ে
তুমি শক্তির অটুট খনি।
কমরেড, আজ কিষাণ শ্রমিক তোমার পাশে
তুমি যে মুক্তি রটনা করো,
তারাই সৈন্য: হাজারে হাজারে এগিয়ে আসে
তোমার দু’পাশে সকলে জড়ো।
হে বন্ধু আজ তুমি বিদ্যুৎ অন্ধকারে
সে আলোয় দ্রুত পথকে চেনা:
সহসা জনতা দৃপ্ত গেরিলা—অত্যাচারে,
দৃঢ় শত্র‌ুর মেটায় দেনা।
তোমার মন্ত্র কোণে কোণে ফেরে সংগোপনে
পথচারীদের ক্ষিপ্রগতি:
মেতেছে জনতা মুক্তির দ্বার উদ্ঘাটনে:
—ভীরু প্রস্তাবে অসম্মতি।
ফসলের ক্ষেতে শত্র‌ু রক্ত-সেচন করে,
মৃত্যুর ঢেউ কারখানাতে—
তবুও আকাশ ভরে আচমকা আর্তস্বরে:
শত্রু নিহত স্তব্ধ রাতে।
প্রবল পাহাড়ে গোপনে যুদ্ধ সঞ্চারিত
দৃঢ় প্রতিজ্ঞা মুখর গানে,
বিপ্লবী পথে মিলেছে এবার বন্ধু তিতো:
মুক্তির ফৌজ আঘাত হানে।
শত্র‌ু শিবিরে লাগানো আগুনে বাঁধন পোড়ে

—অগ্নি ইসারা জনান্তিকে!
ধ্বংসস্তূপে আজ মুক্তির পতাকা ওড়ে
ভাঙার বন্যা চতুর্দিকে।
নামে বসন্ত, পাইন বনের শাখায় শাখায়
গাঢ়-সংগীত তুষারপাতে,
অযুত জীবন ঘনিষ্ঠ দেহে সামনে তাকায়:
মারণ-অস্ত্র সবল হাতে।
লক্ষ জনতা রক্তে শপথ রচনা করে—
‘আমরা নই তো মৃত্যুভীত,
তৈরী আমরা; যুগোশ্লাভের প্রতিটি ঘরে
তুমি আছ জানি বন্ধু তিতো।’
তোমার সেনানী পথে প্রান্তরে দোসর খোঁজে:
‘কোথায় কে আছ মুক্তিকামী?’
ক্ষিপ্ত করেছে তোমার সে ডাক আমাকেও যে
তাইতো তোমার পেছনে আমি॥