বন্যা

বন্যার জলে ভেসে গেছে সব ধানের চারারা;
অনেক শ্রমের মূল্যে বোনে মাঠে রক্তের ধারা
দরিদ্র কৃষক তার সামান্য সম্পদ বেচে কিনে,
এখন মরতে হবে দুর্ভিক্ষের দুরন্ত দুদিনে।

জল নেমে গেলে, মাঠে জেগে ওঠে শুকনো ফাটল,
বুভুক্ষু গহবরে ওঠে ক্ষুধার উত্তাপে কোলাহল,
ধ্বংসের তাণ্ডবে চুর্ণ চৌচির বিচিত্র রুক্ষ্ম রুপ
দেখে দেখে আতঙ্কে অন্তরাত্মা হয়ে আসে চুপ।

উপোসী বৌয়ের নেই, এমন কি, পরনের শাড়ী,
রুগ্ন শিশুর দুধ বার্লি নিয়ে তুচ্ছ কাড়াকাড়ি,
অন্ন নেই ঘরে, কানা কড়ি নেই কৃষকের হাতে,
দুঃখী কৃষক জানে, মৃত্যু আছে তাদের বরাতে।

মহাজন দুর্ভিক্ষে কখনও করে না তো ক্ষমা!
তার ঘরে চড়া দামে কৃষকের মাথা পড়ে জমা।
ভাগ্যের পরিহাসে খাদ্যের দারুণ অভাব,
মজুতদারের দ্বারের কঙ্কালের দ্রুত আবির্ভাব।

বন্যা কেন নিয়ে গেল শুধুই মাঠের যত ধান,
কেন সে নিল না এই কটিমাত্র হতভাগ্য প্রাণ!